০২:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪

রূপগঞ্জে সরকারী সম্পত্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলা; দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ

মো. নুর আলম, রূপগঞ্জ :
  • আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
  • / ১৪১

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার শিংলাবো এলাকায় অবস্থিত ৫৫ শতাংশ সরকারী অর্পিত সম্পত্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে ওই সম্পত্তির লীজ গ্রহীতা এইচএম ইমরান হোসেনকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যা মামলার আসামী আফজাল হোসেন ওরফে খাড়া আফজাল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পুলিশের দুই পুলিশ কর্মকর্তা এ সুযোগে মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করার ভয় দেখিয়ে ওই লীজ গ্রহীতার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গত শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে ব্যবসায়ী এইচএম ইমরান হোসেন বাদী হয়ে মিথ্যা মামলায় হয়রানীর অভিযোগে ও ১০ লাখ টাকা চাওয়ায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মহা-পুলিশ পরির্দশকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মহা-পুলিশ পরির্দশকের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে এইচএম ইমরান অভিযোগ করে জানান, তিনি একজন ব্যবসায়ী। আমলাবো মৌজার ৩৫৯নং খতিয়ানের ১৫৯৬ নং দাগের ৮৩ শতাংশ জমি হতে ৫৫ শতাংশ সরকারী অর্পিত সম্পত্তি (ভিপি সম্পত্তি) আইন মেনে জেলা প্রশাসকের সম্মতিক্রমে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) এইচএম ইমরানকে লীজ দেয়। লীজ গ্রহীতা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী খাজনা পরিশোধ করে সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করে জনকল্যাণ মুলক একটি প্রতিষ্ঠানের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কিছু কাজ শুরু করেন। আর এই সরকারী সম্পত্তি ভুয়া দলিল দিয়ে আত্বসাতের জন্য ভুলতা এলাকার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যা মামলার ৫নম্বর আসামী আফজাল হোসেন ওরফে খাড়া আফজাল ও আফজালের স্ত্রী কুলসুম বেগম আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের এসআই শাকিল আহাম্মেদ ও ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজের কাছে তদন্তের জন্য দেয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা তদন্ত পাওয়ার পর এক সঙ্গে এসে লীজ গ্রহীতা এইচএম ইমরান হোসেনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় হয়রানী করা হবে ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, হত্যা মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক থাকায় আফজাল হোসেনের স্ত্রী কুলসুম বেগমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এসআই শাকিল আহাম্মেদ ও ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজ। এরপর কুলসুমকে দিয়ে এইচএম ইমরানের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করিয়ে আবার নিজেরাই মামলার তদন্ত হাতে নেন ওই দুই কর্মকর্তা। এইচএম ইমরান অভিযোগ করে আরো জানান, আফজালের স্ত্রী কুলসুমের দায়ের করা একটি মামলায় আদালতে সরকারী সম্পত্তি নিজের দাবি করতে গিয়ে দলিল ভুয়া প্রমাণিত হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন ভাবে মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের এসআই শাকিল আহাম্মেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। গত দেড় বছর আগে আমার ইমরানের সাথে দেখা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজ বলেন, একটি মামলার বিবাদী ছিলেন ইমরান হোসেন। ওই মামলার চার্জশিট দিয়ে দিয়েছিলাম আরো আগে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

সরকারী সম্পত্তি আত্বসাতের বিষয়ে কুলসুম বেগম বলেন, আমাদের সম্পত্তি অন্যায় ভাবে দখলে নেয়া হয়েছে। জমি ফেরতের জন্যই মামলা করেছি। পলাতক থাকায় বক্তব্যে নেয়ার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেও আফজাল হোসেনকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সিমন সরকার বলেন, ৫৫ শতাংশ সরকারী ভিপি সম্পত্তি এইচএম ইমরান গংকে লীজ দেয়া হয়েছে। লীজ গ্রহীতা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। ভিপি সম্পত্তি কারো ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি নয়। এই সম্পত্তি সরকারী সম্পত্তি।

নারায়ণগঞ্জের পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) বনজ কুমার বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে অভিযোগটি আমার কাছে আসলে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

রূপগঞ্জে সরকারী সম্পত্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে মিথ্যা মামলা; দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৬:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার শিংলাবো এলাকায় অবস্থিত ৫৫ শতাংশ সরকারী অর্পিত সম্পত্তি দখলে ব্যর্থ হয়ে ওই সম্পত্তির লীজ গ্রহীতা এইচএম ইমরান হোসেনকে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যা মামলার আসামী আফজাল হোসেন ওরফে খাড়া আফজাল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পুলিশের দুই পুলিশ কর্মকর্তা এ সুযোগে মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানী করার ভয় দেখিয়ে ওই লীজ গ্রহীতার কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।

গত শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে ব্যবসায়ী এইচএম ইমরান হোসেন বাদী হয়ে মিথ্যা মামলায় হয়রানীর অভিযোগে ও ১০ লাখ টাকা চাওয়ায় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মহা-পুলিশ পরির্দশকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

মহা-পুলিশ পরির্দশকের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে এইচএম ইমরান অভিযোগ করে জানান, তিনি একজন ব্যবসায়ী। আমলাবো মৌজার ৩৫৯নং খতিয়ানের ১৫৯৬ নং দাগের ৮৩ শতাংশ জমি হতে ৫৫ শতাংশ সরকারী অর্পিত সম্পত্তি (ভিপি সম্পত্তি) আইন মেনে জেলা প্রশাসকের সম্মতিক্রমে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) এইচএম ইমরানকে লীজ দেয়। লীজ গ্রহীতা সরকারী নিয়ম অনুযায়ী খাজনা পরিশোধ করে সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করে জনকল্যাণ মুলক একটি প্রতিষ্ঠানের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কিছু কাজ শুরু করেন। আর এই সরকারী সম্পত্তি ভুয়া দলিল দিয়ে আত্বসাতের জন্য ভুলতা এলাকার আলোচিত ছাত্রলীগ নেতা রাকিব হত্যা মামলার ৫নম্বর আসামী আফজাল হোসেন ওরফে খাড়া আফজাল ও আফজালের স্ত্রী কুলসুম বেগম আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলাটি নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের এসআই শাকিল আহাম্মেদ ও ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজের কাছে তদন্তের জন্য দেয়া হয়। ওই দুই কর্মকর্তা তদন্ত পাওয়ার পর এক সঙ্গে এসে লীজ গ্রহীতা এইচএম ইমরান হোসেনের কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় হয়রানী করা হবে ফাঁসিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, হত্যা মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে পলাতক থাকায় আফজাল হোসেনের স্ত্রী কুলসুম বেগমের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এসআই শাকিল আহাম্মেদ ও ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজ। এরপর কুলসুমকে দিয়ে এইচএম ইমরানের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করিয়ে আবার নিজেরাই মামলার তদন্ত হাতে নেন ওই দুই কর্মকর্তা। এইচএম ইমরান অভিযোগ করে আরো জানান, আফজালের স্ত্রী কুলসুমের দায়ের করা একটি মামলায় আদালতে সরকারী সম্পত্তি নিজের দাবি করতে গিয়ে দলিল ভুয়া প্রমাণিত হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন ভাবে মামলা ও অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের এসআই শাকিল আহাম্মেদ বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। গত দেড় বছর আগে আমার ইমরানের সাথে দেখা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ পিবিআইয়ের ইন্সপেক্টর মাসুদ পারভেজ বলেন, একটি মামলার বিবাদী ছিলেন ইমরান হোসেন। ওই মামলার চার্জশিট দিয়ে দিয়েছিলাম আরো আগে। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

সরকারী সম্পত্তি আত্বসাতের বিষয়ে কুলসুম বেগম বলেন, আমাদের সম্পত্তি অন্যায় ভাবে দখলে নেয়া হয়েছে। জমি ফেরতের জন্যই মামলা করেছি। পলাতক থাকায় বক্তব্যে নেয়ার জন্য অনেকবার চেষ্টা করেও আফজাল হোসেনকে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সিমন সরকার বলেন, ৫৫ শতাংশ সরকারী ভিপি সম্পত্তি এইচএম ইমরান গংকে লীজ দেয়া হয়েছে। লীজ গ্রহীতা নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। ভিপি সম্পত্তি কারো ব্যক্তি মালিকানা সম্পত্তি নয়। এই সম্পত্তি সরকারী সম্পত্তি।

নারায়ণগঞ্জের পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) বনজ কুমার বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে অভিযোগটি আমার কাছে আসলে অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন