০৯:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪

প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিনব্যাপী কর্মবিরতি

স্টাফ রিপোর্টার :
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
  • / ১৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সর্বজনীন পেনশনের আওতায় নতুন করে ঘোষণা করা ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। এই কর্মসুচী আগামীকাল বুধবার দিনব্যাপী চলবে। প্রত্যয়কে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা তুলে নিয়ে ‘প্রতিশ্রুত’ সুপার গ্রেড এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়ার দাবি করেছেন তারা।

প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে বর্ণনা করে তা তুলে নিয়ে ‘প্রতিশ্রুত’ সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়ার দাবিতে দুইদিনব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার ২রা জুলাই ও ৩রা জুলাই বুধবার সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এই কর্মসুচী চলবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের পক্ষে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল শান্ত। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। এই কর্মসূচির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর,শিক্ষক নেতৃবৃনদসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঐক্যমত পোষণ করে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করে।

কয়েকজন শিক্ষক নেতা বলেন, একটি কুচক্রী মহল অল্প কয়েকজন পেশাজীবীকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করে নিজেদের তার আওতামুক্ত রেখেছে। এ ধরনের স্কিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ এর সভাপতি মোকারেরম হোসেন মাসুম বলেন, “এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। আমরা আমাদের পেশার সুযোগ-সুবিধার কথা বলছি। শ্রীলঙ্কা ও নেপালের মত দেশেও কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পে-স্কেল।

জাককানইবি শিক্ষকদের ভাষ্য- সর্বজনীন শব্দটার যথার্থ ব্যবহার হওয়া উচিত। এ আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়, এটা শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি। এই আন্দোলন অর্থের জন্য নয়, শিক্ষকদের মর্যাদার জন্য। পেনশন স্কিমে প্রথমে প্রত্যয় স্কিম ছিল না, একটা কুচক্রী মহল এটিকে পরে নিয়ে এসে শিক্ষকদের তাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এর সভাপতি বলেন, “আজ থেকে আমাদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হল। আগামী দুই দিনও চলবে। ৩রা জুলাই পর্যন্ত আমরা এই পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব। পরীক্ষা ও জরুরি কার্যক্রম এ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। তবে এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ৩রাজুলাই এর পর থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব। তখন আমাদের হলের প্রভোস্ট হলে যাবেন না, কোনো বিভাগের চেয়ারম্যান বিভাগে যাবেন না, ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটে যাবেন না। এমনকি যে শিক্ষকেরা প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন, তারাও দায়িত্ব পালন করবেন না।”

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সার্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহবানে এই কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। এর আগে একই দাবিতে গত ৩০জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

এদিকে-শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। রেজিস্ট্রার ভবন সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এসেছেন সনদ তুলতে। কিন্তু কর্মবিরতি থাকায় সে তার কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন না। এ প্রতিনিধিকে সে শিক্ষার্থী বলেন, ‘কর্মবিরতির কারণে আমার সার্টিফিকেট তোলার কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। আমার জরুরি দরকার ছিল।

আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল শান্ত বলেন, দাবির বিষয়ে এখনো সরকারের কোনো পর্যায় থেকে তাঁরা কোনো আশ্বাস পাননি। তাই তাঁদের এই কর্মসূচি আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সিদ্বান্ত মোতাবেক পরিচালিত হবে।

দুপুরে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই মূল চত্বরে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। হলগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সেখানে দেখা যায়। রেজিস্ট্রার ভবন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক কার্যক্রমের কেন্দ্র। সেখানে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা–কর্মচারী নেতা এই প্রতিনিধিকে জানান- দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মবিরতি পালন করে যাবেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

প্রত্যয়’ পেনশন স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিনব্যাপী কর্মবিরতি

আপডেট সময় : ০৪:৫৪:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ জুলাই ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সর্বজনীন পেনশনের আওতায় নতুন করে ঘোষণা করা ‘প্রত্যয়’ স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। এই কর্মসুচী আগামীকাল বুধবার দিনব্যাপী চলবে। প্রত্যয়কে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তা তুলে নিয়ে ‘প্রতিশ্রুত’ সুপার গ্রেড এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়ার দাবি করেছেন তারা।

প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে ‘বৈষম্যমূলক’ বলে বর্ণনা করে তা তুলে নিয়ে ‘প্রতিশ্রুত’ সুপার গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করতে এবং স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দেওয়ার দাবিতে দুইদিনব্যাপী এ কর্মসূচির আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

মঙ্গলবার ২রা জুলাই ও ৩রা জুলাই বুধবার সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত এই কর্মসুচী চলবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদের পক্ষে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল শান্ত। এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন। এই কর্মসূচির সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর,শিক্ষক নেতৃবৃনদসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঐক্যমত পোষণ করে কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করে।

কয়েকজন শিক্ষক নেতা বলেন, একটি কুচক্রী মহল অল্প কয়েকজন পেশাজীবীকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত করে নিজেদের তার আওতামুক্ত রেখেছে। এ ধরনের স্কিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না।

কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ এর সভাপতি মোকারেরম হোসেন মাসুম বলেন, “এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। আমরা আমাদের পেশার সুযোগ-সুবিধার কথা বলছি। শ্রীলঙ্কা ও নেপালের মত দেশেও কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে সম্মানজনক পে-স্কেল।

জাককানইবি শিক্ষকদের ভাষ্য- সর্বজনীন শব্দটার যথার্থ ব্যবহার হওয়া উচিত। এ আন্দোলন সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়, এটা শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি। এই আন্দোলন অর্থের জন্য নয়, শিক্ষকদের মর্যাদার জন্য। পেনশন স্কিমে প্রথমে প্রত্যয় স্কিম ছিল না, একটা কুচক্রী মহল এটিকে পরে নিয়ে এসে শিক্ষকদের তাতে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ এর সভাপতি বলেন, “আজ থেকে আমাদের কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু হল। আগামী দুই দিনও চলবে। ৩রা জুলাই পর্যন্ত আমরা এই পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করব। পরীক্ষা ও জরুরি কার্যক্রম এ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে। তবে এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ৩রাজুলাই এর পর থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব। তখন আমাদের হলের প্রভোস্ট হলে যাবেন না, কোনো বিভাগের চেয়ারম্যান বিভাগে যাবেন না, ইনস্টিটিউটের পরিচালকরা ইনস্টিটিউটে যাবেন না। এমনকি যে শিক্ষকেরা প্রশাসনিক দায়িত্বে আছেন, তারাও দায়িত্ব পালন করবেন না।”

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সার্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের আহবানে এই কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। এর আগে একই দাবিতে গত ৩০জুন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে কর্মবিরতি ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদ নেতৃবৃন্দ।

এদিকে-শিক্ষক,কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। রেজিস্ট্রার ভবন সরেজমিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী এসেছেন সনদ তুলতে। কিন্তু কর্মবিরতি থাকায় সে তার কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন না। এ প্রতিনিধিকে সে শিক্ষার্থী বলেন, ‘কর্মবিরতির কারণে আমার সার্টিফিকেট তোলার কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি। আমার জরুরি দরকার ছিল।

আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা পরিষদ এর সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল শান্ত বলেন, দাবির বিষয়ে এখনো সরকারের কোনো পর্যায় থেকে তাঁরা কোনো আশ্বাস পাননি। তাই তাঁদের এই কর্মসূচি আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স ফেডারেশনের সিদ্বান্ত মোতাবেক পরিচালিত হবে।

দুপুরে রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনেকেই মূল চত্বরে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। হলগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সেখানে দেখা যায়। রেজিস্ট্রার ভবন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক কার্যক্রমের কেন্দ্র। সেখানে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা–কর্মচারী নেতা এই প্রতিনিধিকে জানান- দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মবিরতি পালন করে যাবেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন