মেঘনা ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়কে সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ স্থাপন
![](https://protidinernews.com/wp-content/uploads/2024/06/pn_Logo-4.jpg)
- আপডেট সময় : ০৭:৫৩:২৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
- / ৩০
![](https://protidinernews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মতলব উত্তরের মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়কে সুড়ঙ্গ করে গোপন সুড়ঙ্গ কেটে ও রাস্তার ওপর ড্রেজার পাইপ বসিয়েছে অসাধু বালি ব্যবসায়ীরা কোনো স্থানে রাতের আঁধারে আবার কোনো স্থানে দিন-দুপুরে বোরিং করে প্রকাশ্যে কাটছে সড়ক। এতে যেমন হুমকির মুখে পড়তে পারে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ফসলি জমি, অন্যদিকে সড়ক ভেঙ্গে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে এধরনের প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে মাঝে মধ্যে সড়কের ওপর থেকে ড্রেজারের পাইপ অপসারণ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কিছুদিন পর কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে পুনরায় শুরু করেন ড্রেজারের মাধ্যমে বালুর ব্যবসা।
মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধের এখলাছপুর, জনতাবাজার, দশানী, শিকিরচর, শিকিরচর বটতলা, ইমামপুর, কালিপুর পাম্পহাউজ, বেলতলি, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন জুড়ে বেড়িবাঁধের রাস্তার ওপর ও নিচ দিয়ে ড্রেজারের পাইপ লাইন টানা হয়েছে। রাস্তা দখল করে পাইপ লাইন নেয়ার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা উপেক্ষা করে কৃষিজমি ও রাস্তার ওপর পাইপ লাইন নিয়ে রমরমা ব্যবসা করছে স্থানীয় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা।
সড়ক ছাড়াও এ পাইপ নেওয়া হয়েছে ফসলী জমির ওপর দিয়ে পাকা ও কাচা রাস্তার মাটি কেটে নিচ ও ওপর দিয়ে নেওয়া হয়েছে ড্রেজারের পাইপ। এসব জায়গায় পাইপের ওপর মাটি ফেলে কয়েক ফুট উঁচু করা হয়েছে। এতে চলাচলে প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরকার প্রতি বছরই জনস্বার্থে রাস্তাঘাট উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণ ও পুরাতন রাস্তা মেরামত করছে। আর সেই রাস্তা কেটে ড্রেজার পাইপ লাইন বসিয়ে ব্যবসা করে আসছে বালু খেকোরা।
চলতি অর্থ বছরে মেঘনা ধনাগোদা বেড়ীবাঁধের প্রায় ১শ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তার প্রস্তুতকরণ ও সংস্করনের কাজ হয়েছে এরই মাঝে ছেংগারচর পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের জনৈক বালু ব্যবসায়ী মেঘনা ধনাগোদা বেড়ীবাঁধের রাস্তা কেটে তার নিচ দিয়ে ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন করেন। রাস্তা কেটে পাইপ লাইন নেওয়ার কারণে রাস্তার টিকসই কমে ডেমিজ হয়ে যে কোন সময় রাস্তা দেবে বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংক্ষা থাকে ।তাই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া রাস্তা খোড়া ও রাস্তা কাটার ব্যাপারে সম্পুর্ন নিষেধাজ্ঞা রয়েছে । তারপরেও কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে অনুমতি ছাড়াই রাস্তা সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ স্থাপন করেন অবৈধ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ীরা।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেকসই ও গুনগত মানের রাস্তা নির্মাণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি সরকারের পরামর্শ ও নির্দেশ রয়েছে আর সেদিকে দৃস্টি রেখেই কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। কিন্তু তাদের বাঁধাকে উপেক্ষা করে সড়ক কেটে ও গোপন সুডঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ লাইন বসিয়ে অবৈধভাবে বালুর ব্যবসা করে আসছে ড্রেজার মালিকরা।
সড়ক সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসানোয় বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, বেড়ীবাঁধ সড়কের এ অংশে ৬০ কিলোমিটারে রয়েছে ২০টির বেশি ড্রেজার পাইপ। এসব পাইপ দিন-দুপুরে অনুমোদন ছাড়াই পাইপ লাইন স্থাপন করেন ড্রেজার মালিরা। প্রশাসন কর্তৃক মাঝে মধ্যে ড্রেজার পাইপ লাইন উচ্ছেদ করা হলেও কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে বার বার রাস্তা কেটে নিচ ও ওপর দিয়ে ড্রেজার পাইপ স্থাপন করছেন বালু ব্যবসায়ীরা। এতে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়কের যেমন ধস নামতে পারে তেমনই বাঁধের অধীনে থাকা লাখো পরিবারের নিরাপত্তাও পড়তে পারে হুমকিতে।
চাঁদপুর সড়ক বিভাগের একজন প্রকৌশলী বলেন, সড়কের ওপর ড্রেজারের পাইপ লাইলের কারণে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃস্টি হয় অন্যদিকে সড়ক কেটে গোপন সুড়ঙ্গ করে সড়কের নিচ দিয়ে পাইপ লাইন স্থাপনের কারণে সড়কের টেকসই গুনগত মান কমে যাওয়ার ফলে যে কোন সময় বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশংক্ষা থাকে তাই কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া রাস্তা খোরা ও রাস্তা কাটা সম্পুর্ণঅবৈধ।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া যারা সড়ক কেটে ও গোপন সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ লাইন স্থাপন কিন্বা যেকোন কারণে রাস্তা খোরা কিন্বা রাস্তা কাটবে তাদের বিরুদ্ধে সরকারের বিধিমোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একি মিত্র চাকমা বলেন, মেঘনা ধনাগোদা বেড়ীবাঁধ সুড়ঙ্গ করে ও রাস্তার উপরে অপরিকল্পিত অবৈধভাবে ড্রেজারে পাইপ বসানোর কোন সুযোগ নেই। রাস্তার উপরে ড্রেজারের পাইপ বসিয়ে কেউ যেন, যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে। এরপরেও যদি কেউ করে তার বিরুদ্বে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।