কয়রা‘য় জমে উঠেছে কুরবানির পশুর হাট
- আপডেট সময় : ০৯:৫১:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪
- / ১৩৩
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে কয়রার পশুর হাটগুলো। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। ধর্মীয় ঐতিহ্য ও ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আগামী ১৭জুন ঈদুল আযহা উপলক্ষে পশু কোরবানি করবেন মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লিরা। কুরবানি উপলক্ষে পশু কেনা-বেচায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কুরবানিদাতা ও ব্যবসায়ীরা। ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ থাকায় খুশি খামারি ও ব্যবসায়ীরা। সীমান্ত এলাকা দিয়ে যেনো কোনভাবেই ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য বিজিবির পক্ষ থেকেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া খামারিরা এবার গরু মোটা-তাজাকরণে ওষুধ প্রয়োগ থেকেও বিরত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।
কয়রার সব চেয়ে বড় পশুর হাট বসে কয়রা উপজেলার বাগালী ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বামিয়া ফুটবল খেলার মাঠে। আর এ পশুর হাটটি সার্বিক পরিচালনায় থাকেন বামিয়া জি,আই বি ক্লাব। দ্বিতীয় বৃহত্তম হাট বসে উপজেলার ঘুগরাকাটি বাজার হাটে কুরবানির পশু কেনা-বেচা হয়।এই সব হাটে দেশীয় প্রজাতির বহু সংখ্যাক গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল ওঠে। কিন্তু এবার কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে হাটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেলেও বিক্রি সেভাবে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন গরুর খামারী ও ব্যবসায়িরা।
গত বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পশুর দাম বেশি হওয়ায় হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যাক পশু থাকলেও বিক্রি তুলনামূলকভাবে বেশ কম। দাম বেশি হওয়ায় মধ্যবিত্তরা এবার ঝুঁকছেন ছোট বা মাঝারি সাইজের পশু ক্রয়ের দিকে। যেকারণে এবারের কুরবানী ঈদে লাখ টাকা বাজেটের মধ্যে গরুর চাহিদা একটু কম। তবে পশু হাট গুলোতে মাঝারি সাইজের গুরু ও ছাগলের চাহিদা তুলনামূলক বেশি। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সংকটের কারণে সাধ্যের মধ্যে না থাকায় সাধারণ ক্রেতারা এবার বড় গরু কিনতে বেশী আগ্রহী নয়।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কয়রার পশুহাটে অন্যান্য বারের মতো চমকপ্রদ ও বিশালাকৃতির সারি সারি গরুর দেখা মেলেনি। হাতে গোনা কয়েকটি বড় সাইজের গরু হাটে তুললেও, ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রখর রোদে দাড়িয়ে থেকে ক্রেতা না মেলায় তা ফিরিয়ে নিয়ে যান ব্যবসায়ী ও খামারীরা। এদিকে মাঝারি সাইজের খাসি ছাগল ১২থেকে ১৫হাজার এবং ত্রিশ কেজি ওজনের বড় সাইজের খাসি ছাগল ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
স্থানীয় খামারিরা বলছেন, এবার পর্যাপ্ত দেশি জাতের গরু পালন করেছেন। গরুকে খাবার হিসেবে কাচা ঘাস, খৈল, চিটা গুড়, বিচলী, ভুসি, খুদ এবং ধানের কুড়াসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তবে পশুখাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় গরু পালনে খরচ অনেক বেড়েছে।
আরো বলেন, কোরবানির পশুর দাম এবার বেশি হবে। কারণ উৎপাদন খরচ বেড়েছে। উৎপাদন খরচ বাড়ায় তাদের লাভের পরিমাণ কমবে। তবে, কেউ লোকসান দিয়ে গরু বিক্রি করবে না। ক্রেতারা এখন কিনলে কিছুটা কমে কিনতে পারবেন। কোরবানির হাটে তারা প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পেলে পশু বিক্রি করবেন না। সেক্ষেত্রে ক্রেতাদের বাড়তি দামেই কিনতে হবে।
পশু কিনতে আসা আঃ আলিম বলেন, ২ ঘন্টা ধরে ঘুরছি কিন্তু দর-দাম ঠিক না হওয়ায় পশু কিনতে পারছিনা। এবারে গরু-ছাগলের দাম অনেক বেশি। তারপরও কিনতে তো হবেই। তিনি আরো বলেন, কয়েকটি খামার ও পশুর হাট ঘুরেছি গরু কেনার জন্য কিন্তু বাজেটে না কুলানোর জন্য এখনো কিনতে পারিনি।
সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে। এ বিষয়ে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবি এম তারিক উজ্জামান বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে ।