০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সিদ্ধিরগঞ্জে চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র, জোর করে চাঁদা আদায়

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ১০:০১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
  • / ১২৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে। অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো আপত্তি না থাকলেও একটি কুচক্রি মহল বর্তমান কমিটি বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি কমিটি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই লক্ষ্যে দুই মাস পূর্বে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটি গঠন করা করেছে।

গত ১৭ মে শুক্রবার রাত ১১.৩০ টায় ও শনিবার সকালে চৌধুরীবাড়ি এলাকার প্রায় দুই শতাধিক দোকান থেকে ১৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। তবে নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিবের দাবি, নতুন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামগ্রিক খরচ বহন করার জন্য ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় এই টাকা দিয়েছেন। কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হয় নি। তবে কয়েকজন ব্যবসায়ীর দাবি, ওইদিন রাতে জামান, আরিফ, হাসনাহসহ প্রায় ২০-৩০ জন ব্যক্তি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এই টাকা আদায় করেন। এদের মধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ী থাকলেও অধিকাংশ ব্যক্তি অন্য এলাকার লোক ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন কমিটির ২০১৮-২০২১ ইং পর্যন্ত পরিচালনা পরিষদ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কিন্তু ২০২১-২০২৩ ইং পর্যন্ত কমিটির কিছু কর্মকর্তা অনুপস্থিত এবং কমিটির কার্যক্রমে তাদের দায়িত্ব পালন না করার কারণে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নতুন কর্মকর্তা নিয়ে পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হয়। এতে ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদ সচল রাখার স্বার্থে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হলো। ১৭ বিশিষ্ট এই কমিটি অনুমোদনে ১৬৫ জন ব্যবসায়ীর মধ্যে ১৫৩ জন ব্যবসায়ীই এতে সম্মতি দেন। এর আগে গত ২ মার্চ নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বলা হয়, আমার ৮নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত চৌধুরীবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি আবেদন করেন। আবেদনের বিষয়বস্তু ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান।

এ বিষয় নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে গত ৬ মার্চ বিকাল ৩ টায় চৌধুরী বাড়ী রয়েল প্যালেস কমিটি সেন্টারে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই আলোচনায় সভায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা। তার আলোচনা সভায় উপস্থিত না হওয়ায় এক কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে নিজে গিয়ে হুমকি দেন। কাউন্সিলর রুহুলের এই কর্মকান্ড নিয়ে অনেক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, এই কমিটির বিরুদ্ধে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় আমরা নির্বাচন ছাড়াই কমিটি করার সম্মতি দিয়েছে। কেননা একাধিক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন করে টাকা নষ্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ব্যবসায়ীরাই সিদ্ধান্ত দিয়েছি নির্বাচন করে যে অর্থ নষ্ট হবে তা দিয়ে আমরা অন্য কোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারি।

চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহসীন ভূইয়া বলেন, সংখ্যাগনিষ্ট ব্যবসায়ীর মতামতের ভিত্তিতে বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়। আমরা এই কমিটি গঠনের আগে সকল ব্যবসায়ী নিয়ে বসেছিলাম। তারাই মতামত দিয়েছিল কমিটি গঠনের। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তি হয়তো কোনো কুচক্রি মহলের উস্কানিতে এই কাজ করছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী যদি এখনো চায় তারা এই কমিটি চায় না। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি চান। তাহলে আমি এখনই এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো। আর এখানে আমার বড় কোনো স্বার্থ নেই যে জোর খাটিয়ে আমি সভাপতি পদ দখল করে রাখবো। কিন্তু একটি গোষ্ঠী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গিয়ে লোকবল দিয়ে চাঁদা আদায় করে জোর করে নির্বাচন দিতে চাচ্ছে। অথচ অধিকাংশ ব্যবসায়ী বর্তমান কমিটির পক্ষে। আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোনো টাকা আদায় করে নি। আর তারা জোর করে দোকানে দোকানে গিয়ে নির্বাচনের নাম বলে চাঁদা আদায় করছেন। তা সত্যিই দু:খজনক।

এইসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব জামান বলেন, জোর করে কোনো টাকা কিংবা চাঁদা আদায় করা হয় নি। অ্যাসোসিয়শনের নির্বাচনের জন্য এই টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছাতেই এই টাকা দিয়েছেন। একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে গেলে আনুষঙ্গিক কিছু টাকার প্রয়োজন হয়। এ কারণে সব ব্যবসায়ী এই টাকা প্রদান করেছেন। গত এক যুগ ধরে অ্যাসোসিয়শনের কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি। তাই ব্যবসায়ীরা চান, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন হোক। এর আগে আমরা নিজেদের অর্থায়নে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছিলাম। ব্যবসায়ীদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেছিলাম। একজন ব্যক্তি জোর করে কোনো নির্বাচন ছাড়াই সভাপতি পদ নিয়ে বসে আছেন। তাই আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিটি করে এই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

সিদ্ধিরগঞ্জে চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্র, জোর করে চাঁদা আদায়

আপডেট সময় : ১০:০১:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে আবারও নতুন করে ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ উঠেছে। অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে ব্যবসায়ীদের কোনো আপত্তি না থাকলেও একটি কুচক্রি মহল বর্তমান কমিটি বাদ দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে আরেকটি কমিটি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এই লক্ষ্যে দুই মাস পূর্বে ১৬ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটি গঠন করা করেছে।

গত ১৭ মে শুক্রবার রাত ১১.৩০ টায় ও শনিবার সকালে চৌধুরীবাড়ি এলাকার প্রায় দুই শতাধিক দোকান থেকে ১৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। তবে নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিবের দাবি, নতুন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামগ্রিক খরচ বহন করার জন্য ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় এই টাকা দিয়েছেন। কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হয় নি। তবে কয়েকজন ব্যবসায়ীর দাবি, ওইদিন রাতে জামান, আরিফ, হাসনাহসহ প্রায় ২০-৩০ জন ব্যক্তি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে এই টাকা আদায় করেন। এদের মধ্যে কয়েকজন ব্যবসায়ী থাকলেও অধিকাংশ ব্যক্তি অন্য এলাকার লোক ছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছিল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন কমিটির ২০১৮-২০২১ ইং পর্যন্ত পরিচালনা পরিষদ তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। কিন্তু ২০২১-২০২৩ ইং পর্যন্ত কমিটির কিছু কর্মকর্তা অনুপস্থিত এবং কমিটির কার্যক্রমে তাদের দায়িত্ব পালন না করার কারণে তাদের অব্যাহতি দিয়ে নতুন কর্মকর্তা নিয়ে পরিচালনা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করে নতুন পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হয়। এতে ব্যবসায়ী পরিচালনা পরিষদ সচল রাখার স্বার্থে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হলো। ১৭ বিশিষ্ট এই কমিটি অনুমোদনে ১৬৫ জন ব্যবসায়ীর মধ্যে ১৫৩ জন ব্যবসায়ীই এতে সম্মতি দেন। এর আগে গত ২ মার্চ নাসিক ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে বলা হয়, আমার ৮নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত চৌধুরীবাড়ী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ২০২২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি আবেদন করেন। আবেদনের বিষয়বস্তু ছিল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান।

এ বিষয় নিয়ে আলোচনার লক্ষ্যে গত ৬ মার্চ বিকাল ৩ টায় চৌধুরী বাড়ী রয়েল প্যালেস কমিটি সেন্টারে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। পরবর্তীতে এই আলোচনায় সভায় অধিকাংশ ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন না। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ জানান কাউন্সিলর রুহুল আমিন মোল্লা। তার আলোচনা সভায় উপস্থিত না হওয়ায় এক কাপড় ব্যবসায়ীর দোকানে নিজে গিয়ে হুমকি দেন। কাউন্সিলর রুহুলের এই কর্মকান্ড নিয়ে অনেক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

ব্যবসায়ীদের দাবি, এই কমিটির বিরুদ্ধে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় আমরা নির্বাচন ছাড়াই কমিটি করার সম্মতি দিয়েছে। কেননা একাধিক প্রার্থী না থাকলে নির্বাচন করে টাকা নষ্ট করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমরা ব্যবসায়ীরাই সিদ্ধান্ত দিয়েছি নির্বাচন করে যে অর্থ নষ্ট হবে তা দিয়ে আমরা অন্য কোনো জায়গায় ব্যবহার করতে পারি।

চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. মহসীন ভূইয়া বলেন, সংখ্যাগনিষ্ট ব্যবসায়ীর মতামতের ভিত্তিতে বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়। আমরা এই কমিটি গঠনের আগে সকল ব্যবসায়ী নিয়ে বসেছিলাম। তারাই মতামত দিয়েছিল কমিটি গঠনের। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ব্যক্তি হয়তো কোনো কুচক্রি মহলের উস্কানিতে এই কাজ করছে। অধিকাংশ ব্যবসায়ী যদি এখনো চায় তারা এই কমিটি চায় না। নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি চান। তাহলে আমি এখনই এই কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো। আর এখানে আমার বড় কোনো স্বার্থ নেই যে জোর খাটিয়ে আমি সভাপতি পদ দখল করে রাখবো। কিন্তু একটি গোষ্ঠী ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে গিয়ে লোকবল দিয়ে চাঁদা আদায় করে জোর করে নির্বাচন দিতে চাচ্ছে। অথচ অধিকাংশ ব্যবসায়ী বর্তমান কমিটির পক্ষে। আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় কোনো ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোনো টাকা আদায় করে নি। আর তারা জোর করে দোকানে দোকানে গিয়ে নির্বাচনের নাম বলে চাঁদা আদায় করছেন। তা সত্যিই দু:খজনক।

এইসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনী পূর্ববর্তী আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব জামান বলেন, জোর করে কোনো টাকা কিংবা চাঁদা আদায় করা হয় নি। অ্যাসোসিয়শনের নির্বাচনের জন্য এই টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছাতেই এই টাকা দিয়েছেন। একটি নির্বাচনের আয়োজন করতে গেলে আনুষঙ্গিক কিছু টাকার প্রয়োজন হয়। এ কারণে সব ব্যবসায়ী এই টাকা প্রদান করেছেন। গত এক যুগ ধরে অ্যাসোসিয়শনের কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নি। তাই ব্যবসায়ীরা চান, নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন হোক। এর আগে আমরা নিজেদের অর্থায়নে ঈদ পুনর্মিলনীর আয়োজন করেছিলাম। ব্যবসায়ীদের নিয়ে একাধিকবার বৈঠকে বসেছিলাম। একজন ব্যক্তি জোর করে কোনো নির্বাচন ছাড়াই সভাপতি পদ নিয়ে বসে আছেন। তাই আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কমিটি করে এই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে চাই।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন