চাঁদপুরে সুমনের ঘোড়া মার্কাকে ঠেকাতে যত কুট কৌশল
- আপডেট সময় : ০৫:২৬:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মে ২০২৪
- / ১০২
চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে হুমায়ন কবির সুমনের ঘোড়া মার্কাকে ঠেকাতে নানান কুট কৌশল ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন তার কর্মী সমর্থকগণ। যদিও এসব কুট কৌশলকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েই প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের পাশে ঘোড়া প্রতীকের নির্বাচনী কার্যালয় খুলে প্রচার কার্যক্রম এগিয়ে নিচ্ছেন হুমায়ন কবির সুমন।
শনিবার, ১৮ মে এ প্রতিবেদককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হুমায়ন কবির সুমনের কতিপয় সমর্থক এই কুট কৌশল তুলে ধরেন।
ঘোড়া মার্কার সমর্থকরা বলেন, নেত্রী শেখ হাসিনা ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে এই নির্বাচনে কোন একক প্রার্থীর পক্ষে দলীয় সমর্থণ এমনকি এমপি মন্ত্রী ও তার স্বজনদের সমর্থণ না দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। কিন্তু চাঁদপুর সদরে একজন বিশেষ প্রার্থী স্থানীয় এমপি’র বরাত দিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ওই প্রার্থীর ইশারায় একটি বিশেষ পত্রিকায় কোন একজন বিশেষ সাংবাদিকের নোংরা ইঙ্গিতপূর্ণ সংবাদও আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। যা ডকুমেন্ট আকারে আমরা সংগ্রহে রেখেছি।
ঘোড়া মার্কার সমর্থকরা বলেন, শহরে রোমান ভাই ও জসীম ভাইয়ের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঘোড়া মার্কার সমর্থণে মিছিল করলেও সে সংবাদ ওই বিশেষ পত্রিকায় ওই সংবাদিকের প্রভাব বিস্তারে কভারেজ পায়নি। যদিও চাঁদপুরের অন্যান্য পত্র-পত্রিকা ও জাতীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ঠিকই প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন পদ ও ঠিকাদারী কাজের প্রলোভনসহ নানান মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ঘোড়া মার্কার বিপরীতে কাজ করতে বাধ্য করছে। এমনকি নির্বাচনে মন্ত্রী ও প্রশাসনিক পাওয়ার ব্যবহার করার আশ্বাস দিয়েও ঘোড়া মার্কার সমর্থণ না করে অন্য একটি বিশেষ মার্কার বিজয় সুনিশ্চিত বলেও সাধারণ নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করছে। কেউ কেউ এমনও রটাচ্ছে মন্ত্রী ও মেয়রের বাইরে প্রশাসন যাবেনা। কাজেই ঘোড়া জেতার কোন প্রশ্নই আসেনা। এছাড়াও জনপ্রিয়তা ঠেকাতে নানা স্থানে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী হুমায়ন কবির সুমনের ব্যণার পোষ্টার ছিঁড়ে তাকে কোন ঠাঁসা করতেও তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, হুমায়ন কবির সুমন হচ্ছেন মৃত মফিজুল ইসলাম ও হাসনা হেনা দম্পতীর ৪ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। বর্তমানে তিনি স্ত্রী ও কন্যা সন্তানসহ বিটি রোডে বসবাস করে সমাজসেবাসহ রাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।পারিবারিকভাবেই আওয়ামীমনা পরিবারে বেড়ে উঠা সুমন ১৯৯৮/৯৯ সনের দিকে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। কলেজের ছাত্রদের সাথে দারুন সম্পৃক্ত থাকায় এরপর তিনি কলেজ ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির একমাত্র সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। শুধু তাই নয় পরবর্তীতে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্যও হন। এছাড়াও তিনি ২০০৮/৯ সালে জেলা ছাত্রলীগের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি প্রার্থী হয়েও বয়স ২৯ পার হওয়ার কারনে সভাপতি হওয়া থেকে বঞ্চিত হন। এরপর তিনি ডা. দীপু মনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর এপিএস ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
আরও জানা যায়, হুমায়ন কবির সুমন বর্তমানে রাজনীতির পাশাপাশি আইন পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়াও তিনি ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যলয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, মধ্য তরপুর চন্ডী আলী দাখিল মাদ্রাসার সভাপতি, মারফোতননেছা এতিমখানার পরিচালক, শেখ কামাল ক্রীড়া একাডেমীর যুগ্ম সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে শিক্ষা, ক্রীড়া ও সামাজিকতায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে নানাবিধ প্রশংসনীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জানান, হুমায়ন কবির সুমন সদালাপী এবং কর্মীবান্ধব নেতা হওয়ায় তৃণমূলে তার জনপ্রিয়তা ব্যাপক। বিশেষ করে এই সাবেক ছাত্রনেতা সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হয়ে সদরের ১৪টি ইউনিয়নের ১২৬টি ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে কমিটি দেন। এতে করে এইসব কমিটি দিতে গিয়ে যুবলীগ ছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে তার দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপিত হয়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং চাঁদপুরের উন্নয়নের রূপকার সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি’র হাতকে শক্তিশালী করতেও তার নিরলসভাবে কাজ করা নেতাকর্মীদের দারুনভাবে অনুপ্রাণিত করছে। যার কারনে কর্মীসম্পৃক্ত এই যুবনেতাকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখা এখন সময়ের দাবী। যদিও তিনি গতবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় ছিলেন।
এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে অ্যাড. হুমায়ন কবির সুমন বলেন, যখন থেকেই পারিবারিক নির্দেশনায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে লালন করে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছি। তখন থেকেই সকল পর্যায়ের নির্বাচন হতে শুরু করে দলীয় সকল কার্যক্রমে সরব রয়েছি। দলের দুঃসময়েও মাঠে ছিলাম এখনো মাঠে রয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমার রাজনৈতিক বিগত দিনের সকল কর্মকান্ড বিবেচনা করে আসন্ন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া মার্কায় আমি সবার থেকে সমর্থণ ও ভোট প্রত্যাশা করছি। ইনশাআল্লাহ আমি কথা দিচ্ছি, চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করলে চাঁদপুর সদর উপজেলার প্রতিটি নেতাকর্মীকে সাথে নিয়ে এই সদর উপজেলাবাসীর সেবা করে করতে আমার সর্বাত্মক চেষ্টা থাকবে। কোথায় কি বরাদ্দ তাও আমি সবার সামনে প্রকাশ্যে তুলে ধরবো। একইসাথে দলের সন্মান অক্ষুন্ন রাখতেও পূর্বের মতোই কাজ করে যাবো ইনশাআল্লাহ।