নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, প্রার্থীর প্রচারণায় শিক্ষক
- আপডেট সময় : ০১:০৩:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪
- / ৯২
আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচার, প্রচারণায় অংশ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এরশাদ মিয়া তিনি সাহতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি প্রচার-প্রচারণায় সরাসরি অংশ নেওয়ার অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে গণমাধ্যম। শিক্ষক এরশাদ মিয়া নির্বাচনী আচরণবিধি না মেনে প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মহলে বেশ সমালোচনা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া প্রচারণার ছবি এবং ভিডিওতে শিক্ষক এরশাদ মিয়াকে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে সাহতা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে উঠান বৈঠক ও প্রচারপত্র বিলি করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাহতা ইউনিয়নের স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, এরশাদ মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও নিজেকে ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা দাবি করেন। এমনকি তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও দলীয় মিটিং, মিছিলেও অংশগ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক এরশাদ মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি, ভিডিও আমার নয়। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমি কোন নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেননি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের নির্বাচনের প্রচারে অংশ না নেওয়ার বিষয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এটি বাস্তবায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশও দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। তাছাড়া চাকরিবিধিতে উল্লেখ আছে- সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্বাচনে কোন প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচার, প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না।
জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান বলেন, ‘অভিযুক্ত ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর প্রচলিত আইন অনুযায়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। যেহেতু এটি শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন, তাই তদন্ত সাপেক্ষে তাদেরকে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা হয়েছে।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বলেন, একজন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক কখনও কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার কোন বিধান নেই। এ বিষয়ে ইসির কড়া নির্দেশ রয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোন প্রার্থীর পক্ষে সরাসরি কোন ধরনের নির্বাচনী প্রচার, প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার দুইজন কর্মকর্তাকে দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি বলেন, ‘এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। একজন সরকারি কর্মকর্তা কোনভাবেই নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিতে পারেন না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচনী সকল দায়িত্ব থেকে তাকে বাদ দেয়া হবে এবং তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’