চকরিয়ায় জোড়া খুনকে কেন্দ্র করে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি
- আপডেট সময় : ১০:২৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
- / ৯৬
কক্সবাজারের চকরিয়ায় জোড়া খুনের ঘটনায় নিরীহ ও সন্দেহভাজন লোকজনের বাড়িতে চালানো হচ্ছে লুটপাটের রামরাজত্ব। মামলায় আসামী করার হুমকী দিয়ে অর্থ-বিত্তবান ও নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার আতংকে সরকারি কর্মচারিসহ বেশ কিছু নিরপরাধ ব্যক্তি ভয়ে নিজগ্রাম ছেড়ে ভিন্ন এলাকায় রাতপার করছে।
চকরিয়া উপজেলার মানিকপুর-সুরাপুর ইউনিয়নে গত ১৬ এপ্রিল গ্রাম পুলিশসহ দুই ব্যক্তিকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করার ঘটনাকে ঘিরে ওই এলাকায় চলছে এমন লোমহর্ষক ঘটনা।
জানাগেছে, গত ১৬ এপ্রিল উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের দুই নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় আদিপাত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় মেম্বার জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে ওইদিন সন্ধ্যা পৌনে ৮টার দিকে স্থানীয় আরাফাত সওদাগরের দোকানের নিকটে প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে শফিউল আলম চৌকিদার ও গেল ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রতিদ্বন্দ্বী মো; সেলিমকে হত্যা করে।
এ ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল শফিউল আলম চৌকিদারের ভাই সামশুল আলম বাদী হয়ে ৭জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। কিন্তু অভিযোগ উঠে, মামলায় আসামী করার ভয় দেখিয়ে বাদীপক্ষের লোকজন এলাকার নিরীহ লোকজনের কাছ থেকে ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে। চাঁদাবাজিতে অতীষ্ট হয়ে ৩০ এপ্রিল চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি নালিশী মামলাও দায়ের করা হয়।
স্থানীয় মুস্তাক আহমদ সিকদারের ছেলে ভুক্তভোগি রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করেন (সিআর মামলা নং১০৬৮/২৪)। এতে আসামী করা হয় জোড়া খুনের মামলার বাদী শামসুল আলম ও মৃত ধলা মিয়ার ছেলে নুর মোহাম্মদকে।
রফিকুল ইসলাম দাবী করেন, “২১ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে শামসুল আলম ও নুর মোহাম্মদ আমার কাছ থেকে ২ লাখ করে তারা দু’জনের জন্য ৪লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে, চাঁদা না দিলে দায়ের করা হত্যা মামলায় অন্তুর্ভুক্ত করার হুমকী দেয়। আমি সরকারি কর্মচারি, থাকি পৌরসভায়, অপরাধ না করেও কেন চাদাঁ দিবো এমন কথা বলে জবাব দিলে তারা চলে যায়।
রফিকুল ইসলাম আরও জানান, গত ৩০ এপ্রিল নুর মোহাম্মদ ও শামসুল আলম আবেদনকারী হয়ে ঠিকই আমরা ৯ নিরীহ ব্যক্তিকে জড়িয়ে হত্যা মামলায় সম্পৃক্ত করতে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করেছে। আবেদনটি থানাকে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই মামলায় ৩নং আসামী করা হয়েছে মমতাজ আলম শিকদার নামের এক সরকারি কর্মচারীকে ঘটনার দিন তিনি (জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো) বিএমইটি তে ডিউটি রত ছিলেন তার পরিবারের দাবী পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে তাকে।
এছাড়া বেশ কয়েকটি নিরীহ লোকজনের বাড়ি ঘরে লুপাট চালিয়ে লাখ লাখ টাকার মামলামাল লুটে নিয়েছে বাদীপক্ষের লোকজন। স্থানীয় জয়নাল আবেদীন সিকদারের ছেলে নবাব মিয়া কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, ঘটনার সাথে আমার বিন্দুমাত্র সম্পৃক্ততা নেই, কিন্তু বাদী পক্ষের শামসুল আলম ও নুর মোহাম্মদের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা আমার ঘরে লুটপাট চালিয়ে লাখ টাকার মালামাল লুটে নিয়েছে। বসতঘরে যেতে পারছিনা, হুমকী দিচ্ছে মামলায় সম্পৃক্ত করে দিবে। এলাকায় মধ্যযুগীয় পরিস্তিতি সৃষ্টি করেছে। আমরা এর একটা বিহীত ব্যবস্থা চাই।