০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫

জীবননগরে মেলার নামে চলছে জুয়া, মোটা অংকের টাকার মিনিময়ে অবৈধ সব বৈধ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
  • / ১১৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাহমুদ হাসান রনি :

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর আমতলা ফসলী মাঠে চলছে বৈশাখী মেলা। আর এ মেলার সাথে চলছে জুয়ার আসর। প্রশাসনের কাছ থেকে বৈশাখী মেলার অনুমতি নিলেও সাথে চালনা হচ্ছে আলোচিত জুয়ার আসর। মেলার নামে প্রতি বছর এলাকার একটি সিন্ডিকেট যাত্রা, সার্কাসের আড়ালে অশীলীন নৃত্য, গভীর রাত পর্যন্ত জুয়ার বোর্ড ও র‌্যাফেল ড্র’র নামে চালায় জুয়ার আসর।
গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা। এর পর থেকেই মাইকের উচ্চস্বরে গ্রামে গ্রামে প্রকাশ্যে র‌্যাফেল ড্র নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। দিনরাত সাধারণ মানুষের কানে মাইকের এ আওয়াজ শোনা গেলেও স্থানীয় প্রশাসন নিম্চুপ। কেন এ নিশ্চুপ প্রশাসন তা এলাকাবাসির কাছ। প্রশ্ন। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত ১০টা অবদি প্রায় ৩০/৪০ টি ভ্যান,ও ইজিবাইকে করে উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে বড়ো অংকের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে রেফাল ড্রর নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডোগায়।
মনোহরপুর মাঝের পাড়া আবাসন জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান খাঁন বলেন, এলাকার সিরু, মোস্ত, সেন্টু সহ একটি সিন্ডিকেট প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আবার কোন সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কোন সময় নাম সর্বস্ব ক্লাবের নামে বৈশাখী মেলার নামে এ জুয়ার আসরের আয়োজন থাকেন। এই জুয়ার আসর বসার কারণে এলাকায় চুরি, ডাকাতি বেড়ে যাচ্ছে।
মনোহরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান শিমুল মল্লিক বলেন, মেলার নামে এ জুয়া ও উলঙ্গ নৃত্য শুরু হওয়ার দিনই মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের দান বাক্স সহ বেশ কয়েকটি টিওবয়েল চুরি হয়েছে। এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে গেছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
মেলা মাঠের পশ্চিম পাশে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের স্টল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও দক্ষিণ পাশের অংশে মাঠের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে জুয়ার আসর। রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে এ মেলার সব আয়োজন বন্ধ করার কথা থাকলেও শুধু জমজমাট জুয়ার আসর টিকিয়ে রাখতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার রমরমা বাণিজ্য। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে এ জুয়ার আসরে। প্রতিটি জুয়ার বোর্ডে প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকার জুয়াখেলা হচ্ছে। অনেকের ধারণা স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রতিদিন উপজেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা মনোহরপুর আমতলা মাঠে প্রকাশ্যে এ জুয়ার বোর্ড চালানো হচ্ছে। তা না হলে কেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা? এলাকাবাসির ধারণা প্রতিদিন একটি মহলকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে এ জুয়ার আসর চালানো হচ্ছে। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ।
তিনি বলেন, বৈশাখী মেলার অনুমোদন আছে তবে জুয়া বা র‌্যাফেল ড্র অনুমোদন দেওয়া হয়নি।ঘটনাটি সঠিক হলে ব্যবস্হা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, মেলার নামে কোন প্রকার জুয়া বা অশ্লীলতা মেনে নেয়া হবে না। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিচ্ছি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। মেলা চত্বরে ১৫টি স্পটে কাপড় টানিয়ে বসানো হয়েছে এ জুয়ার আসর। আর এসব জুয়ার বোর্ড থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা তুলছেন আয়োজক কমিটির লোকজন। এ কথা গুলে বলেন, মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সিরু মিয়া। তিনি আরও বলেন, জেলার কিছু সাংবাদিকের আশ্বাসে আমরা বৈশাখের মেলা করছি। তিনি দম্ভের সাথে বলেন এ জুয়া, জুয়া না, এটাও বৈশাখী মেলারই একটা অংশ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

জীবননগরে মেলার নামে চলছে জুয়া, মোটা অংকের টাকার মিনিময়ে অবৈধ সব বৈধ

আপডেট সময় : ০৭:০১:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মাহমুদ হাসান রনি :

জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর আমতলা ফসলী মাঠে চলছে বৈশাখী মেলা। আর এ মেলার সাথে চলছে জুয়ার আসর। প্রশাসনের কাছ থেকে বৈশাখী মেলার অনুমতি নিলেও সাথে চালনা হচ্ছে আলোচিত জুয়ার আসর। মেলার নামে প্রতি বছর এলাকার একটি সিন্ডিকেট যাত্রা, সার্কাসের আড়ালে অশীলীন নৃত্য, গভীর রাত পর্যন্ত জুয়ার বোর্ড ও র‌্যাফেল ড্র’র নামে চালায় জুয়ার আসর।
গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে এ মেলার আনুষ্ঠানিকতা। এর পর থেকেই মাইকের উচ্চস্বরে গ্রামে গ্রামে প্রকাশ্যে র‌্যাফেল ড্র নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। দিনরাত সাধারণ মানুষের কানে মাইকের এ আওয়াজ শোনা গেলেও স্থানীয় প্রশাসন নিম্চুপ। কেন এ নিশ্চুপ প্রশাসন তা এলাকাবাসির কাছ। প্রশ্ন। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত ১০টা অবদি প্রায় ৩০/৪০ টি ভ্যান,ও ইজিবাইকে করে উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে বড়ো অংকের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে রেফাল ড্রর নামে জুয়ার টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে উপজেলা প্রশাসনের নাকের ডোগায়।
মনোহরপুর মাঝের পাড়া আবাসন জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান খাঁন বলেন, এলাকার সিরু, মোস্ত, সেন্টু সহ একটি সিন্ডিকেট প্রতি বছর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে আবার কোন সময় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, কোন সময় নাম সর্বস্ব ক্লাবের নামে বৈশাখী মেলার নামে এ জুয়ার আসরের আয়োজন থাকেন। এই জুয়ার আসর বসার কারণে এলাকায় চুরি, ডাকাতি বেড়ে যাচ্ছে।
মনোহরপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান শিমুল মল্লিক বলেন, মেলার নামে এ জুয়া ও উলঙ্গ নৃত্য শুরু হওয়ার দিনই মনোহরপুর বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদের দান বাক্স সহ বেশ কয়েকটি টিওবয়েল চুরি হয়েছে। এলাকার মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে গেছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা।
মেলা মাঠের পশ্চিম পাশে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের স্টল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও দক্ষিণ পাশের অংশে মাঠের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছে জুয়ার আসর। রাত সাড়ে ১০টার মধ্যে এ মেলার সব আয়োজন বন্ধ করার কথা থাকলেও শুধু জমজমাট জুয়ার আসর টিকিয়ে রাখতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে জুয়ার রমরমা বাণিজ্য। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে এ জুয়ার আসরে। প্রতিটি জুয়ার বোর্ডে প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকার জুয়াখেলা হচ্ছে। অনেকের ধারণা স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই প্রতিদিন উপজেলা শহরের ব্যস্ততম এলাকা মনোহরপুর আমতলা মাঠে প্রকাশ্যে এ জুয়ার বোর্ড চালানো হচ্ছে। তা না হলে কেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা? এলাকাবাসির ধারণা প্রতিদিন একটি মহলকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে এ জুয়ার আসর চালানো হচ্ছে। অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ।
তিনি বলেন, বৈশাখী মেলার অনুমোদন আছে তবে জুয়া বা র‌্যাফেল ড্র অনুমোদন দেওয়া হয়নি।ঘটনাটি সঠিক হলে ব্যবস্হা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, মেলার নামে কোন প্রকার জুয়া বা অশ্লীলতা মেনে নেয়া হবে না। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিচ্ছি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য। মেলা চত্বরে ১৫টি স্পটে কাপড় টানিয়ে বসানো হয়েছে এ জুয়ার আসর। আর এসব জুয়ার বোর্ড থেকে নির্দিষ্ট অংকের টাকা তুলছেন আয়োজক কমিটির লোকজন। এ কথা গুলে বলেন, মেলা আয়োজক কমিটির অন্যতম সদস্য সিরু মিয়া। তিনি আরও বলেন, জেলার কিছু সাংবাদিকের আশ্বাসে আমরা বৈশাখের মেলা করছি। তিনি দম্ভের সাথে বলেন এ জুয়া, জুয়া না, এটাও বৈশাখী মেলারই একটা অংশ।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন