১২:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

ঈদের তিনদিন আগে-পরে মহাসড়কে ট্রাক-লরি বন্ধ রাখতে হবে : সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

প্রতিদিনের নিউজ :
  • আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
  • / ৮৮

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

প্রতিদিনের নিউজ :

ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে থ্রি-হুইলারের পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাচলে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে ঈদের তিনদিন আগে-পরে মহাসড়কে ট্রাক-লরি চলাচলে বন্ধ রাখতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানী বনানীতে বিআরটিএ ভবনে এক সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনদের নিয়ে এ সভা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্ঘটনা নিয়ে আমাদের দুর্ভাবনা চলছেই। এই দুর্ঘটনার শেষ নেই। এখানে থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেল, বেপরোয়া ড্রাইভিং-সবকিছু মিলিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য নিরাপদ সড়ক প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি শীতল মনোভাব নিয়ে থাকি, তাহলে দুর্ঘটনা হতেই থাকবে। এ ব্যাপারে দোষ না চাপিয়ে যার যার দায়িত্ব পালন করা উচিত।
ঈদযাত্রায় থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলকে সবচেয়ে বড় উপদ্রব উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে একটি নীতিমালা করা দরকার। ২২টি সড়ক-মহাসড়কে এসব চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে না। এখানে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ’র সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটা যদি না হয় তাহলে যত সিদ্ধান্ত নেই না কেন, তা বাস্তবায়ন করা কঠিন।
এ সময় ঢাকা শহরে এখনো লক্কড়ঝক্কড় বাস চলাচল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে এসব গাড়ি তৈরির অনেক কারখানা আছে। আমি নিজে দেখেছি। গাড়িতে রং লাগাচ্ছে। ১০ দিনও থাকে না এসব রং।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে প্রাইভেটকার কত আধুনিক। কিন্তু বাসগুলোর দিকে তাকানো যায় না। মফস্বল ও চট্টগ্রামে চলাচল করা গাড়ি (বাস) এর থেকে ভালো। ঢাকার এসব লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি আমাদের উন্নয়ন অর্জনকে লজ্জা দেয়।
এ সময় বাসমালিকদের ঈদ উপলক্ষে লোক দেখানো নয়, বাসগুলোকে মোটামুটি ফিটনেসে আনার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় ঈদের যানজটের সম্ভাব্য ১৫৫টি স্থান চিহ্নিত করা হয়। তবে মন্ত্রী কয়েকটি স্থানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ঈদের সময় দুটা জায়গায় ঠিক করেন সব ঠিক। ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভারে ফেনী থেকে আসতে যে সময় লাগে, সেই ফ্লাইওভার পার হতে এর চেয়ে বেশি সময় লাগে। এখানে একটা কিন্তু আছে। সেটা দেখতে হবে। আর গাজীপুরের চন্দ্রা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়সহ কয়েকটা জায়গা ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গটাই আসল। চট্টগ্রামে সমস্যা হবে না। সিলেট সড়কের কাজ কয়েকদিন বন্ধ রাখুন। নতুবা বৃষ্টির পানি আর নির্মাণাধীন রাস্তার ইট-বালুতে সব একাকার হয়ে যাবে। গাজীপুরের বিষয়টি আমি নিজেই দেখছি। চৌরাস্তায় সাতটি ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হচ্ছে। গাজীপুরে এমনিতেই এখন আর উল্লেখযোগ্য যানজট নেই।
গাড়ির চাপ থাকলে যানজট হবেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একেবারে যানজট মুক্ত হবে এই দাবি করা সমীচীন নয়।
ঈদযাত্রায় গাড়ি চলাচল সচল রাখতে ঈদের আগে-পরে পাঁচদিন স্টেশন খোলা রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।
ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে মনিটরিং থাকলেও, যারা অতিরিক্ত ভাড়া নেয়, তাদের আগেভাগেই সতর্ক করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এসময় পরিবহনে চাঁদাবাজি একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
২২টি সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে তিনি অনেক জনপ্রতিনিধিদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি থ্রি-হুইলার সড়কে চলতে দেন। গরিবের জন্য এত দরদ! কিন্তু এতে করে কতজনের যে প্রাণহানি হয়! জীবন আগে না জীবিকা আগে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদের তিনদিন আগে ও পরের তিনদিন মহাসড়কে ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, লরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। এখানে শুধু প্রয়োজনীয় খাদ্য, গার্মেন্টস, জ্বালানি, ওষুধ বহনকারী যানবাহন চলবে।
মতবিনিময় সভায় ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনরা তাদের মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

ঈদের তিনদিন আগে-পরে মহাসড়কে ট্রাক-লরি বন্ধ রাখতে হবে : সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

আপডেট সময় : ০৪:১৪:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মার্চ ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

প্রতিদিনের নিউজ :

ঈদে সড়কে দুর্ঘটনা এড়াতে থ্রি-হুইলারের পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাচলে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে ঈদের তিনদিন আগে-পরে মহাসড়কে ট্রাক-লরি চলাচলে বন্ধ রাখতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানী বনানীতে বিআরটিএ ভবনে এক সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনদের নিয়ে এ সভা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্ঘটনা নিয়ে আমাদের দুর্ভাবনা চলছেই। এই দুর্ঘটনার শেষ নেই। এখানে থ্রি-হুইলার, মোটরসাইকেল, বেপরোয়া ড্রাইভিং-সবকিছু মিলিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। এজন্য নিরাপদ সড়ক প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। যদি শীতল মনোভাব নিয়ে থাকি, তাহলে দুর্ঘটনা হতেই থাকবে। এ ব্যাপারে দোষ না চাপিয়ে যার যার দায়িত্ব পালন করা উচিত।
ঈদযাত্রায় থ্রি-হুইলার ও মোটরসাইকেলকে সবচেয়ে বড় উপদ্রব উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে একটি নীতিমালা করা দরকার। ২২টি সড়ক-মহাসড়কে এসব চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু তা কার্যকর হচ্ছে না। এখানে হাইওয়ে পুলিশ ও বিআরটিএ’র সক্ষমতা বাড়াতে হবে। এটা যদি না হয় তাহলে যত সিদ্ধান্ত নেই না কেন, তা বাস্তবায়ন করা কঠিন।
এ সময় ঢাকা শহরে এখনো লক্কড়ঝক্কড় বাস চলাচল নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে এসব গাড়ি তৈরির অনেক কারখানা আছে। আমি নিজে দেখেছি। গাড়িতে রং লাগাচ্ছে। ১০ দিনও থাকে না এসব রং।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে প্রাইভেটকার কত আধুনিক। কিন্তু বাসগুলোর দিকে তাকানো যায় না। মফস্বল ও চট্টগ্রামে চলাচল করা গাড়ি (বাস) এর থেকে ভালো। ঢাকার এসব লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি আমাদের উন্নয়ন অর্জনকে লজ্জা দেয়।
এ সময় বাসমালিকদের ঈদ উপলক্ষে লোক দেখানো নয়, বাসগুলোকে মোটামুটি ফিটনেসে আনার আহ্বান জানান তিনি।
মতবিনিময় সভায় ঈদের যানজটের সম্ভাব্য ১৫৫টি স্থান চিহ্নিত করা হয়। তবে মন্ত্রী কয়েকটি স্থানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বলেন, ঈদের সময় দুটা জায়গায় ঠিক করেন সব ঠিক। ঢাকায় হানিফ ফ্লাইওভারে ফেনী থেকে আসতে যে সময় লাগে, সেই ফ্লাইওভার পার হতে এর চেয়ে বেশি সময় লাগে। এখানে একটা কিন্তু আছে। সেটা দেখতে হবে। আর গাজীপুরের চন্দ্রা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম পাড়সহ কয়েকটা জায়গা ঠিক করতে হবে।
তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গটাই আসল। চট্টগ্রামে সমস্যা হবে না। সিলেট সড়কের কাজ কয়েকদিন বন্ধ রাখুন। নতুবা বৃষ্টির পানি আর নির্মাণাধীন রাস্তার ইট-বালুতে সব একাকার হয়ে যাবে। গাজীপুরের বিষয়টি আমি নিজেই দেখছি। চৌরাস্তায় সাতটি ফ্লাইওভার খুলে দেওয়া হচ্ছে। গাজীপুরে এমনিতেই এখন আর উল্লেখযোগ্য যানজট নেই।
গাড়ির চাপ থাকলে যানজট হবেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, একেবারে যানজট মুক্ত হবে এই দাবি করা সমীচীন নয়।
ঈদযাত্রায় গাড়ি চলাচল সচল রাখতে ঈদের আগে-পরে পাঁচদিন স্টেশন খোলা রাখতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।
ঈদযাত্রায় অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে মনিটরিং থাকলেও, যারা অতিরিক্ত ভাড়া নেয়, তাদের আগেভাগেই সতর্ক করে দেওয়ার কথা বলেন তিনি। এসময় পরিবহনে চাঁদাবাজি একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
২২টি সড়ক-মহাসড়কে নিরাপদ রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ওবায়দুল কাদের। এক্ষেত্রে তিনি অনেক জনপ্রতিনিধিদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, কোনো কোনো জনপ্রতিনিধি থ্রি-হুইলার সড়কে চলতে দেন। গরিবের জন্য এত দরদ! কিন্তু এতে করে কতজনের যে প্রাণহানি হয়! জীবন আগে না জীবিকা আগে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদের তিনদিন আগে ও পরের তিনদিন মহাসড়কে ট্রাক, কার্ভাড ভ্যান, লরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। এখানে শুধু প্রয়োজনীয় খাদ্য, গার্মেন্টস, জ্বালানি, ওষুধ বহনকারী যানবাহন চলবে।
মতবিনিময় সভায় ঈদযাত্রাকে স্বস্তিদায়ক ও নির্বিঘ্ন করতে অংশীজনরা তাদের মতামত ও সুপারিশ তুলে ধরেন। এছাড়া দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের চেক তুলে দেওয়া হয়।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন