১১:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, কষ্টে দিন পার করছেন মতলব উত্তরের ৮ হাজার জেলে

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৫:০৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
  • / ১০৬

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে সরকার জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা দুইমাসের জন্য নিষিদ্ধ করায় পরিবার পরিজন নিয়ে জেলেরা চিন্তিত রয়েছে। মাছ ধরতে না পেরে তারা লোন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গোপনে কোন জেলে নদীতে গিয়ে যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে।
অভয়াশ্রম হিসাবে খ্যাত মেঘনা ও পদ্মা নদীর চাঁদপুর মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত একশ’ কিলোমিটার এলাকায় নদীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়াও অভিযানে এই সব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে উপজেলার জেলেরা তাদের নৌকা নদীর তীরে নোঙ্গর করে রেখেছে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮ হাজার ২২২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এই সব জেলের মধ্যে ৭ হাজার ১০০ জনকে ২ মাস যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে সচেতন করার পাশাপাশি মৎস্য আড়ৎগুলোকেও অবহিত করা হয়। ষাটনলের বাবুবাজার এলাকার জেলে টিটু বর্মন ও কার্তিক বর্মন জানান, তারা বছরের সব সময়ই নদীতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় ২ মাস তারা মাছ আহরণ করবেন না।
কিন্তু তাদেরকে ২ মাসের জন্য যে চাল খাদ্য সহায়তা হিসাবে দেয়া হয় তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো যেন ২ মাস ওপরে উঠিয়ে রাখে। কারণ জাটকা ইলিশ এই সময়ে মিঠা পানিতে নিরাপদে বিচরণ করে বড় হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, গত কয়েকবছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রমের মধ্যে মতলব উত্তরের আমিরাবাদ থেকে ষাটনল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও জানান, জাতীয় মৎস্য সম্পদ জাটকা ইলিশ রক্ষা করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। আর এই ২ মাস উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, উপজেলা মৎস্য বিভাগ ২৪ ঘণ্টা রুটিন অনুযায়ী নদীতে দায়িত্ব পালন করছে। অভয়াশ্রম এলাকার জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদেরকে নিয়ে সভা করা হয়। জাটকা ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য জেলেপাড়ায় মাইকিং করা হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, সরকার জাটকা ইলিশ রক্ষায় সফল হলে আবার ইলিশ উৎপাদনের সুফল পেতে শুরু করবে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময় সবাইকে জাটকা ইলিশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোন নৌকা নদীতে নামতে দেয়া হবে না। জাটকা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা, কষ্টে দিন পার করছেন মতলব উত্তরের ৮ হাজার জেলে

আপডেট সময় : ০৫:০৩:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি:

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে সরকার জাতীয় মৎস্য সম্পদ ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা দুইমাসের জন্য নিষিদ্ধ করায় পরিবার পরিজন নিয়ে জেলেরা চিন্তিত রয়েছে। মাছ ধরতে না পেরে তারা লোন পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গোপনে কোন জেলে নদীতে গিয়ে যাতে মাছ শিকার করতে না পারে সেজন্য টহল ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন সংক্রান্ত টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি নিয়েছে।
অভয়াশ্রম হিসাবে খ্যাত মেঘনা ও পদ্মা নদীর চাঁদপুর মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে লক্ষীপুরের চর আলেকজান্ডার পর্যন্ত একশ’ কিলোমিটার এলাকায় নদীতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে নদীতে ২৪ ঘণ্টা কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশের টিমের অভিযান চলবে। এ ছাড়াও অভিযানে এই সব এলাকায় মাছ আহরণ, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে উপজেলার জেলেরা তাদের নৌকা নদীর তীরে নোঙ্গর করে রেখেছে।
মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৮ হাজার ২২২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে। এই সব জেলের মধ্যে ৭ হাজার ১০০ জনকে ২ মাস যাতে নদীতে মাছ না ধরেন সে জন্য তাদেরকে ইতোমধ্যে মাইকিং করে সচেতন করার পাশাপাশি মৎস্য আড়ৎগুলোকেও অবহিত করা হয়। ষাটনলের বাবুবাজার এলাকার জেলে টিটু বর্মন ও কার্তিক বর্মন জানান, তারা বছরের সব সময়ই নদীতে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ শিকার করেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষিত নিষিদ্ধ সময় ২ মাস তারা মাছ আহরণ করবেন না।
কিন্তু তাদেরকে ২ মাসের জন্য যে চাল খাদ্য সহায়তা হিসাবে দেয়া হয় তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে তাদের মাছ ধরার নৌকাগুলো যেন ২ মাস ওপরে উঠিয়ে রাখে। কারণ জাটকা ইলিশ এই সময়ে মিঠা পানিতে নিরাপদে বিচরণ করে বড় হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, গত কয়েকবছর জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করায় ইলিশের উৎপাদন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের কয়েকটি অভয়াশ্রমের মধ্যে মতলব উত্তরের আমিরাবাদ থেকে ষাটনল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও জানান, জাতীয় মৎস্য সম্পদ জাটকা ইলিশ রক্ষা করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। আর এই ২ মাস উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড, উপজেলা মৎস্য বিভাগ ২৪ ঘণ্টা রুটিন অনুযায়ী নদীতে দায়িত্ব পালন করছে। অভয়াশ্রম এলাকার জনপ্রতিনিধি, মৎস্যজীবী নেতা ও জেলেদেরকে নিয়ে সভা করা হয়। জাটকা ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকার জন্য জেলেপাড়ায় মাইকিং করা হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস জানান, সরকার জাটকা ইলিশ রক্ষায় সফল হলে আবার ইলিশ উৎপাদনের সুফল পেতে শুরু করবে। এবারের নিষেধাজ্ঞার সময় সবাইকে জাটকা ইলিশ রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, কোন নৌকা নদীতে নামতে দেয়া হবে না। জাটকা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন জিরো টলারেন্স দেখাবে এবং কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন