৩২ বছর বয়স হলেও দেখতে শিশুর মতো
- আপডেট সময় : ০৬:০১:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ ২০২৪
- / ১১৩
ইয়াছিন আলী ইমন, কুড়িগ্রাম :
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে যুবক বয়স হলেও দেখতে শিশুর মতো। শিশুদের সঙ্গে তার হেসে খেলেই দিন কাটে তার। ৩২ বছর বয়সী এই শিশু আছর উদ্দিনকে নিয়ে বিপদে পড়েছে তার পরিবার।কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের পিতা আজিম উদ্দিন ও মাতা আছিয়া দম্পত্তির ছেলে আছর উদ্দিন। জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম দিয়া আছর উদ্দিন নাম থাকলেও গ্রামের মানুষ শিশু সমীর বলে চেনেন। বর্তমানে সমীরের বয়স ৩২ বছর। তবে শরীরের গঠন এবং চলাফেরা ঠিক শিশুর মতোই। বয়স বাড়লেও বাড়েনি তার উচ্চতা, বিকশিত হয়নি মন মানসিকতারও। সংসার তার কাছে এখনো অচেনা।মনে হয় এখনও কিছুই বোঝেন না।
সারাদিন ছোট ছেলে মেয়েদের সঙ্গে খেলাধুলা করে কাটছে সমীরের জীবন। শিশু বয়সী আচরণে বাবা মা আছেন দুশ্চিন্তায়। চিকিৎসা করার পরও শরীর ও মনের পরিবর্তন না হওয়ায় তাকে নিয়ে চিন্তার শেষ নেই পরিবারের।
স্বজনরা জানিয়েছেন, সমীর উদ্দিনের জন্ম ১৯৯২ সালে। তিনি দিনমজুর আজিম উদ্দিন ও আছিয়া বেগমের প্রথম সন্তান। সংসারে তিন ভাই বোনের মধ্যে তিনি বড়। ছোট ভাই-বোন বিয়ে করে সংসার করছেন অথচ সমীর এখনো শিশু। তার দেহের বয়স আর মনের বয়স যেন এক ফ্রেমে বন্দি।
সমীর উদ্দিনের মা আছিয়া বেগম বলেন,সমীর জন্মের পর থেকে এমন। তাকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। ওর বয়স ৩২ বছর হলেও সে কিছু বোঝে না। সংসার বিয়েশাদি আত্মীয় স্বজন কোনো কিছু বোঝে না।
‘সারাদিন ছোট ছেলেমেয়েদের সাথে খেলাধুলা করে দিন কাটান।রাগ উঠলে ছোট মানুষের মত আচরণ করে। অনেক চিকিৎসা করেও কোনো ফল পাই নাই। আমরা মরে গেলে ওর জীবন কেমনে চলবে,কে দেখবে, আল্লাহ ভালো জানেন জানে।
’সমীরের প্রতিবেশী মনির হোসেন বলেন, ‘সমীররের বয়স যখন চার বা পাঁচ বছর তখন থেকে দেখি শরীরে কোনো পরিবর্তন নেই। ওর ছোট ভাই বিয়ে করে সংসার করতাছেন। সমীরের তো কিছু হলো না,তার মা বাবা অনেক গরিব। একটা ঘরেই সবাইকে নিয়ে থাকেন।আমরা গ্রামের মানুষ যতটা পারি সাহায্য করি। সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা করলে হয়তো সমীর ভালো থাকতে পারবে।
কুড়িগ্রামের সাবেক সিভিল সার্জন এস এম আমিনুল ইসলাম বলেন‘এটি মূলত খর্বাকৃতির বাচ্চা। যাকে স্ট্যানডিং বেবি বলা হয়। মূলত পুষ্টির অভাবের কারণে জন্মগতভাবে এমন সন্তানের জন্ম হয়।জন্মের পর থেকে যদি সন্তানটির সঠিক চিকিৎসা করা যেত তাহলে কিছুটা পরিবর্তন আনা সম্ভব হতো। বিশেষ করে গর্ভবতী মা ও শিশুর সঠিক পরিচর্যা, আয়োডিনযুক্ত ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হলে খর্বাকৃতি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।