১১:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প ৩৫ বছরে কৃষিজমি কমেছে ৩০ শতাংশ

মমিনুল ইসলাম, মতলব :
  • আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ১১৮

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়াতে ১৯৮৮ সালে চাঁদপুর মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। ১৩ হাজার ৬শ ২ হেক্টর জমিতে সেচ উপযোগী করে প্রকল্পটি চালু করা হলেও বর্তমানে ১০ হাজার হেক্টর দাঁড়িয়েছে । প্রকল্পের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বাড়িঘর সহ অবকাঠাম নির্মাণ করায় ৩৫ বছরে প্রকল্পভুক্ত জমির পরিমাণ ৩০ ভাগ কমছে ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে ২০১০ সাল পর্যন্ত গড় উৎপাদন ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ২১৯ মেট্রিক টন। কিন্তু প্রকল্পের ভিতরে ক্রমাগত নগরায়ণের ফলে ২০২৩-২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ২৩ মেট্রিক টন। চলতি বছর বোর মৌসুমে সারে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। বিপরীতে সাড়ে ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন আউশ ও আমন মৌসুমেও সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল বেড়িবাঁধটি বিতরে রয়েছে ২১৮ কিলোমিটার সেচখাল। ওইসব সেচ খালের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান পাট নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। ফলে সেচ খালগুলো দিয়ে পানি সরবরাহ না হওয়ায় প্রতি বছর ফসলী জমি চাষাবাদ কম হওয়ার কারন দাঁড়িয়েছে।
প্রকল্প এলাকার কৃষকরা জানায়, প্রকল্পটি শুরুতে তিন ফসল ঘরে তুলতে পারলেও বর্তমানে তা পারা যায় না। প্রকল্পের অভ্যন্তরে ফসলী জমিতে বাড়ীঘড় নির্মান ও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আর বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতা সহ নানা করনে দিন দিন ফসলী জমি কমছে। এছাড়াও প্রতি বছরই বিভিন্ন অবকাঠাম সংস্করণ নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছেনা। ওই সংস্কার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রকল্পের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সহ একটি মহল।
১৯৮৭-৮৮ সালে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল বেড়িবাঁধটি নির্মিত হয়। প্রকল্পের অধীনে ২১৮ কিলোমিটার সেচখাল আছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ও সেচ খালের জায়গা দখল করে সেখানে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধের এনায়েতনগর, মমরুজকান্দি, সুজাতপুর, এখলাসপুর, বকুলতলা, মোহনপুর, বেলতলী, চান্দ্রাকান্দি, কালিপুর, ষাটনল, ছেংগারচর, বদরপুর, রামদাসপুরসহ কয়েকটি এলাকার বেশ কিছু জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান ও ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বাঁধটি হুমকিতে রয়েছে।
সেচ প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল জানা যায়, প্রকল্পের ভিতরে বাড়িঘর ও নির্মাণ হওয়ায় কৃষিজমি কমেছে। এব্যাপারে কৃষিজমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মান না করার জন্য পরামর্শমূলক গণ সচেতনতা চালানো হবে।
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য ৩৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন রয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে, আশা করছি আমরা সেচ খাল সংস্কার, বেড়িবাঁধ সংস্কার, নদীতীর সংরক্ষণ, খাল খনন ও নতুন ফ্লোটিং পাম্প কিনতে পারব। এতে সেচ সুবিধা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প ৩৫ বছরে কৃষিজমি কমেছে ৩০ শতাংশ

আপডেট সময় : ০৭:৩১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

দেশের খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়াতে ১৯৮৮ সালে চাঁদপুর মতলব উত্তরে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প নির্মাণ করা হয়। ১৩ হাজার ৬শ ২ হেক্টর জমিতে সেচ উপযোগী করে প্রকল্পটি চালু করা হলেও বর্তমানে ১০ হাজার হেক্টর দাঁড়িয়েছে । প্রকল্পের অভ্যন্তরে যত্রতত্র বাড়িঘর সহ অবকাঠাম নির্মাণ করায় ৩৫ বছরে প্রকল্পভুক্ত জমির পরিমাণ ৩০ ভাগ কমছে ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের অভ্যন্তরে ২০১০ সাল পর্যন্ত গড় উৎপাদন ছিল ১ লাখ ৮ হাজার ২১৯ মেট্রিক টন। কিন্তু প্রকল্পের ভিতরে ক্রমাগত নগরায়ণের ফলে ২০২৩-২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার ২৩ মেট্রিক টন। চলতি বছর বোর মৌসুমে সারে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়। বিপরীতে সাড়ে ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয়েছে। এ ছাড়াও ৩ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন আউশ ও আমন মৌসুমেও সাড়ে ৩ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন লক্ষ মাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল বেড়িবাঁধটি বিতরে রয়েছে ২১৮ কিলোমিটার সেচখাল। ওইসব সেচ খালের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান পাট নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা। ফলে সেচ খালগুলো দিয়ে পানি সরবরাহ না হওয়ায় প্রতি বছর ফসলী জমি চাষাবাদ কম হওয়ার কারন দাঁড়িয়েছে।
প্রকল্প এলাকার কৃষকরা জানায়, প্রকল্পটি শুরুতে তিন ফসল ঘরে তুলতে পারলেও বর্তমানে তা পারা যায় না। প্রকল্পের অভ্যন্তরে ফসলী জমিতে বাড়ীঘড় নির্মান ও শুষ্ক মৌসুমে পানির সংকট আর বর্ষা মৌসুমে জলবদ্ধতা সহ নানা করনে দিন দিন ফসলী জমি কমছে। এছাড়াও প্রতি বছরই বিভিন্ন অবকাঠাম সংস্করণ নামে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও কাজের কাজ কিছু হচ্ছেনা। ওই সংস্কার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রকল্পের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সহ একটি মহল।
১৯৮৭-৮৮ সালে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের প্রায় ৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মূল বেড়িবাঁধটি নির্মিত হয়। প্রকল্পের অধীনে ২১৮ কিলোমিটার সেচখাল আছে। কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ও সেচ খালের জায়গা দখল করে সেখানে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান নির্মাণ করেছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বাঁধের এনায়েতনগর, মমরুজকান্দি, সুজাতপুর, এখলাসপুর, বকুলতলা, মোহনপুর, বেলতলী, চান্দ্রাকান্দি, কালিপুর, ষাটনল, ছেংগারচর, বদরপুর, রামদাসপুরসহ কয়েকটি এলাকার বেশ কিছু জায়গা অবৈধভাবে দখল করে দোকান ও ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে বাঁধটি হুমকিতে রয়েছে।
সেচ প্রকল্পটির নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত পাল জানা যায়, প্রকল্পের ভিতরে বাড়িঘর ও নির্মাণ হওয়ায় কৃষিজমি কমেছে। এব্যাপারে কৃষিজমি ভরাট করে অবকাঠামো নির্মান না করার জন্য পরামর্শমূলক গণ সচেতনতা চালানো হবে।
মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য ৩৪৪ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন রয়েছে। কাজও শুরু হয়েছে, আশা করছি আমরা সেচ খাল সংস্কার, বেড়িবাঁধ সংস্কার, নদীতীর সংরক্ষণ, খাল খনন ও নতুন ফ্লোটিং পাম্প কিনতে পারব। এতে সেচ সুবিধা পূর্বের অবস্থায় ফিরে যাবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন