ঝিকরগাছায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কর্মকান্ডে হতবাক সচেতন মহল: তথ্য থাকলেও দিতে অনিহা
- আপডেট সময় : ০৫:২০:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
- / ৬২
আফজাল হোসেন চাঁদ, ঝিকরগাছা :
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার ক্লিন ইমেজের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন মিয়ার কর্মকান্ডে হতবাক এলাকার সচেতন মহল। অফিসারের নিকট তথ্য থাকলেও অভিযুক্তদের বাঁচাতে তথ্য প্রদান করতে অনিহা প্রকাশ করেছেন তিনি। যখনই সংবাদকর্মীদের তথ্য দরকার হয় তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ক্লিন ইমেজের বিভিন্ন প্রকার গল্প বলে মন সান্তনা দিয়ে তথ্য না দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে তিন উপজেলার জাতীয় সংসদ সদস্য ও তার উপর মহলের সাথে তার সম্পর্কের ফিরিস্তি প্রদান করেন। যার কারণে সংবাদ প্রকাশের দিকে বেশি অগ্রসর হতে পারে না স্থানীয় সংবাদকর্মীরা।
তথ্য অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার কৃতিসন্তান ও বর্তমান ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন মিয়া। তার কর্মজীবনে তিনি ০২/০৩/২০০৩ সালে ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। তখন তার কর্মকান্ডের বিষয়ে তৎকালীন উপজেলার জাতীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় জনতার সাথে মিলে মিশে ভালো ভাবে কর্মদক্ষ প্রমান করতে না পারায় ১৯মাসের মাথায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগের এক পর্যায়ে তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা থেকে অন্য উপজেলাতে বদলী হতে হয়। এরপর তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে একাধিক মামলা সহ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা রয়েছে। তিনি পুনঃরায় বিগত ২১/০৬/২০২২ইং তারিখ হতে অববধি পর্যন্ত তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করে আবারও তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এটা নিয়ে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্ন বিদ্যমান এই যে, কি মধু ঝিকরগাছাতে রয়েছে, অফিসাদের ঝিকরগাছা ছেড়ে যেতে মন চাই না! যদিও কখন বদলী জনিত কারণে অন্য স্থানে চলে যায় তবুও কিছুদিন পরে আবারও ঝিকরগাছার মধুর সন্ধ্যানে আবারও একই পদে একই দায়িত্বে ফিরে আসতে দেখা যায়।
উপজেলার গদখালী ইউনিয়নের বোধখানা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা (১১৫৭৮৮) নামক একটি প্রতিষ্ঠানের অন্যায় ও অনিয়মের বিরুদ্ধে বিগত দুমাস যাবৎ একাধিকবার জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় দৈনিক, অনলাইন প্রিন্ট মিডিয়া ও জাতীয় সাপ্তাহিকে ধারাবাহিক ভাবে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরও সেই অনিয়মের বিরুদ্ধে সঠিক ভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ না করে অনিয়মের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তি বা তাদের নিকটতম ব্যক্তিদের সাথে আতাত করে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের রেহায় পাওয়ার পথ দেখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উল্লেখিত মাদ্রাসাটি বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধিনে দাখিল স্বীকৃতির মেয়াদ শেষে।
প্রতিষ্ঠানে কর্মরত জুনিয়ার মৌলভি শিক্ষক কবির হোসেন (২১০৪১০৮) নামে ভূয়া নিবন্ধনের সনদধারী জাল/জালিয়াতির আশ্রয়ে চাকরী নিয়ে ১৩বছর যাবৎ বিশাল তবিয়তে চাকরী করে ভুয়া সার্টিফিকেটকে চাকরী এবং মাদ্রাসার ইবতেদায়ি কারি শিক্ষক মাকছুদা (৩৭২৫৫৫) শারিরিক সমস্যা দেখিয়ে বিগত প্রায় ৩বছর মাদ্রাসায় কোনো ক্লাস নেননি বলে অভিযোগ থাকলেও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে প্রকাশিত সংবাদের একাধিক পত্রিকা থাকলেও তার বিষয়ে কান চুলনানোর মত কার্যক্রম পরিচালনা করে অভিযুক্তদের অফিসে ডেকে এনে সেটা চা চক্র পর্যন্ত সিমাবদ্ধ হতে দেখা যায় এবং অভিযুক্তদের কঠোর ভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয় আপনারা সাংবাদিককে থামান তারপর আমি দেখছি কি করা যায়। এছাড়াও জুনিয়ার মৌলভি শিক্ষক কবির হোসেনের বড় ভাই যশোর সদর উপজেলার কল্যাণদাহ গোয়ালদাহ বাজার দাখিল মাদ্রাসার সুপার আনারুল ইসলাম ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের গোপন বৈঠক করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযুক্তরা তাদের একাধিক কাগজপত্র জমা দিলেও তিনি সেই কাগজপত্র সংবাদকর্মীদের নিকট দিতে অনিহা প্রকাশ করেছেন তিনি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের পরামর্শ অনুযায়ী সংবাদকর্মীদের থামাতে মাদ্রাসার ইবতেদায়ি কারি শিক্ষক মাকছুদা তার স্বামীকে নিয়ে সংবাদকর্মীর অফিসে গিয়ে বদদোয়া করার পর সংবাদকর্মীকে রিপোর্ট না করতে অনুরোধ করেছেন।
মাদ্রাসার জুনিয়ার মৌলভি শিক্ষক কবির হোসেন বলেন, আমার কাগজপত্র সব সঠিক আছে। আমি সব কাগজপত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট দিয়ে এসেছি। আমার যখন চাকরী হয় তখন আমার বিপক্ষে আর একজনের নিকট থেকে স্যারেরা ১লক্ষ টাকা নেয়। আমি কোনো টাকা না দেওয়ায় আমাকে হেনেস্তা করার জন্য এটা করা হয়েছে। এনটিআরসিএ এর যে কাগজ দেখানো হচ্ছে সেটা ভুয়া।
মাদ্রাসার ইবতেদায়ি কারি শিক্ষক মাকছুদা বলেন, আমি অসুস্থ। আমাকে নিয়ে যারা এমন করছে তাদের নিয়ে আল্লাহ কাছে বিচার দিলাম। আল্লাহ তাদের বিচার করবে। তবে বসে বসে ৩বছর বেতন নেওয়ার বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, আমি তো আমার পরিবর্তে সালমাকে দিয়েছি। সালমাকে মাসে মাসে কিছু সম্মানী দি।
জুনিয়ার মৌলভি শিক্ষক কবির হোসেনের বড় ভাই যশোর সদর উপজেলার কল্যাণদাহ গোয়ালদাহ বাজার দাখিল মাদ্রাসার সুপার আনারুল ইসলাম বলেন, এটা তার বিষয়। কবিরকে নিয়ে তার সাথে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কোন কথাবার্তা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, কথা হয়েছে বিষয়টা দেখেন আপনি।
বোধখানা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ জহুরুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুজ্জামান মোঃ জাহাঙ্গীর হোসাইন মিয়া বলেন, আমার তিন উপজেলার জাতীয় সংসদ সদস্য ও দপ্তরের উপর মহলের সাথে আমার সম্পর্ক খুব সুন্দর। সবাই আমাকে ভালোবাসেন। আমার বদলী হয়ে গেলে তিনারা আমাকে আবারও ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করেন। বোধখানা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা সম্পর্কে তিনি বলেন, তাহারা আমার নিকট কিছু কাগজপত্র দিয়ে গেছে। আমি কাগজপত্র গুলো এনটিআরসিএ পাঠিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসলেই আমি পদক্ষেপ নিবো। তবে সংবাদকর্মীরা সেই কাগজপত্রে দেখতে বা কপি পেতে চাইলে তিনি বলেন, এখন না এনটিআরসিএ থেকে ফলাফল আসলেই আপনাকে দিবো। আর কবিরের বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলার বিষয়ে তিনি বলেন, হ্যা কথা হয়েছে। তবে আদৌ তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এনটিআরসিএ অবহতি করেছেন কিনা সেটা নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দে আছে স্থানীয় সংবাদকর্মীসহ এলাকার সচেতন মহল। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাহবুবুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেনি।