প্রতিদিনের নিউজ:
ছোটবেলায় হারিয়েছেন বাবা-মাকে। এরপর বড় দুই বোনের কাছে মানুষ হোন তিনি। অর্থের টানাপোড়েন সংসার চালাতে যখন হিমশিম তখন বিভিন্ন কাজ করে নিজের উপার্জনের টাকায় লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে ভালোই চলছিল তাদের পরিবার। এরই মধ্যে অঘটন ঘটে। গত ৫ মাস আগে ক্যান্সার ধরা পড়ে তার। বলছিলাম নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ভাটিবন্দর এলাকার মৃত মোস্তফা কামালের ছেলে সোহানুর রহমান শাওনের কথা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকার হাবিবুল্লাহ বাহার ইউনিভার্সিটি কলেজের সমাজকর্ম বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) শেষ বর্ষে পড়তেন তিনি। ঔষধের ফার্মিসিতে চাকরি করে পড়াশোনার খরচ মেটাতেন তিনি। কিন্তু গত জুনে তার হসকিন্স লিম্ফোমা ক্যান্সার ধরা পড়লে তার পরিবারে দুর্যোগের ঘনঘটা নেমে আসে। একদিকে তার চাকুরী চলে যায় অন্যদিকে অসুস্থতার কারণে স্নাতক শেষ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা দিতে ব্যর্থ হোন তিনি। এর ফলে চোখের সামনে তার সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে যায়। অর্থাভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না তিনি। বর্তমানে হুইল চেয়ারেই বন্দী জীবন কাটছে তার।
শাওনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, মাত্র ৫ বছর বয়সে মা-বাবাকে হারিয়েছি। এরপর বড় বোনের কাছে লালিত পালিত হই। গত ৬ মাস যাবৎ আমার হাত-পা অকেজো হয়ে রয়েছে। এর আগে আমার ঘাড়ে একটা বড় অপারেশন হয় ও তারপর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করার পর আমার হসকিন্স লিম্ফোমা ক্যান্সার ধরা পড়ে। সর্বশেষ আমি আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলাম।
ওইখানকার চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, সুস্থ হতে হলে কেমোথেরাপি ও বোনমেরু ট্রান্সপ্ল্যান্ট অপারেশন করা লাগবে। যার খরচ অনেক ব্যয়বহুল। সব মিলিয়ে আনুমানিক ২৫ লাখ টাকা খরচ হতে পারে। এরই মধ্যে আমার পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। আমি আমার পৈতিৃক বাড়ি বিক্রি করতে চাই কিন্তু তাও পারছিনা জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আমি বাঁচতে চাই। ডাক্তার বলেছিল চিকিৎসা করালে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে যেতে পারি। আমি আর এই জীবন সহ্য করতে পারছি না। আমি এখন আমার পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে গেছি। সৃষ্টিকর্তা আমাকে এভাবে বাঁচিয়ে না রেখে একেবারে দুনিয়া থেকে নিয়ে যাক তাতেও আমি খুশি আছি।
শাওনের বড় বোন সুমা আক্তার বলেন, মা বাবা মারা যাওয়ার পর শাওনকে আমি পরম মমতায় বড় করেছি। সবসময় চেষ্টা করেছি মা-বাবার দায়িত্ব পালন করতে। কিন্তু হঠাৎ শাওনের ক্যান্সার ধরা পড়ায় ওর চিকিৎসা করাতে অনেক টাকা ব্যয় হয়েছে। ওর উন্নত চিকিৎসার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা মেটানো আমাদের মতো পরিবারের কাছে অসম্ভব বিষয়। তাই আমি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, তার কথা আমি শুনেছি। আমার সাধ্যমতো আমি তাকে সহযোগিতা করবো।
নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা জানান, আমার পক্ষ থেকে আমি তাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
এসকে মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত "প্রতিদিনের নিউজ ডটকম" হেড অফিস: ৫৩/এ নয়া পল্টন এক্সটেনশন রোড ঢাকা-১২০০। মোবাইল ০১৯৩০ ১৭২ ৫২০, ০১৩১৪ ১৬৮ ৬৪৪ । আঞ্চলিক অফিস: হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেট (নিচ তলা) চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। Email:protidinernews24@gmail
সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না