ফতুল্লায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, থানায় মামলা
- আপডেট সময় : ০১:৩৩:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
- / ৬৭
প্রতিদিনের নিউজ:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে তাজুল ইসলাম (৫৩) নামের এক ব্যাক্তির বাড়িতে হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এসময় দেশীয় অস্ত্র লম্বা ছেন, রাম দা, ছুরি, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল ও লোহার রড দিয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায় সন্ত্রাসীরা।
এদিকে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনার ভিডিও প্রতিবেশী ভুক্তভোগী এক নারীর ভাড়াটিয়া বাড়িতে লাগানো সিসি ক্যামেরায় ধারণ হলে সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতেও হামলা চালিয়ে সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে নিয়ে যায়।
গত শুক্রবার ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে ভুক্তভোগী ওই নারী বাদি হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০/১৫ জনকে আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় আসামিরা হলেন, সাহেব পাড়া মিতালী মার্কেট এলাকার মৃত: মহিউদ্দিন শেখের ছেলে এসএম ফয়েজ ওরফে পান্নু (৪০), মো: শামছুল হকের ছেলে মো: মঈন উদ্দিন (৪০), মৃত আবুল হোসেনের ছেলে নুরুল আমিন (৫৫), নুরুল আমিনের ছেলে মো: ইমরান (৩০), মোহাম্মদ উল্লাহর ছেলে মো: মাসুদ করিম (৪৫) ও ইসুফ দাড়োয়ান (৪০)।
মামলা ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী একটি ইউনিভার্সিটিতে ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। ভুক্তভোগী জানান জমি সংক্রান্ত বিষয়ের জের ধরে প্রতিবেশী জনৈক তাজুল ইসলামের সাথে মামলার আসামিদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে গত শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা তাজুল ইসলামের বাসায় হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। ভাঙচুর শেষে আসামিরা ভুক্তভোগীর ভাড়াটিয়া বাসায় স্থাপনকৃত সিসি ক্যামেরায় উক্ত ভাঙচুরের ঘটনা রেকর্ড হওয়াতে তারা ভুক্তভোগীর বাসার দারোয়ানকে ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ডিলিট করার জন্য বলেন।
দারোয়ান আসামিদের কথায় সম্মতি না দিলে তারা জোরপূর্বক ভাবে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ভাড়াটিয়া বাসার চার নম্বর রুমের তালা ভেঙে রুমে থাকা সিসি ক্যামেরা ডিবিআর, একটি হার্ডডিক্স, দুটি সিসি ক্যামেরা, একটি ২৪ ইঞ্চি মনিটর, একটি টিপি লিংক রাউটার ও মাউস নিয়ে যায়। এ সময় বাড়ির ভাড়াটিয়া জামিনা বেগম তাদেরকে বাধা দিলে চার নম্বর আসামি তার হাতের লোহার রোড দিয়ে ভাড়াটিয়ার কোমরে আঘাত করলে তিনি গুরুতর রক্তাক্ত জখম হন। এক পর্যায়ে তিন নম্বর আসামি চার জন ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে জোরপূর্বক অর্থ হাতিয়ে নেন বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়। আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার পূর্বে এ বিষয়ে কোন মামলা করলে তাদেরকে বড় ধরনের ক্ষতি করা ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন আহত ভাড়াটিয়াকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, মামলার দ্বিতীয় নাম্বার আসামি মো: শামছুল হকের ছেলে মো: মঈন উদ্দিন রাজধানীর সেগুনবাগিচা কাঁচাবাজার ইউনিট বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি জামায়াতের গনসমাবেশে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার আসামি এই মো: মঈন উদ্দিন। তার বিরুদ্ধে দুই ডজন মামলা রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
তাছাড়া এই সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই একের পর এক হামলা চালান সাধারণ মানুষের বাসা বাড়িতে। তাদের এই অত্যাচার থেকে মুক্তি চায় এলাকাবাসী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আযম মিয়া বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।