প্রতিদিনের নিউজ:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দলিল জালিয়াতি ও প্রতারনা করে অন্যের জমি নিজের নামে আর সমবায় সমিতির নামে ভুয়া ব্যাংক সাজিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে রুহুল আমীন নামের এক প্রতারকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, এক সময়ের ছাত্রদল নেতা বর্তমান নামধারী যুবলীগ নেতা প্রতারক রুহুল আমিনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে স্থানীয় নিরীহ শতাধিক ভুক্তভোগী পরিবার। থানা পুলিশের সাথে সক্ষতা ও ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্মে লিপ্ত হলেও অধরা রয়েছে প্রতারক রুহুল।
পর্শ্বি মৌজার গোয়ালপাড়া গ্রামের মৃত সাহাজদ্দিনের মেয়ে রেজিয়া, খুশি ও রমিজা বেগম জানান, তাদের মালিকানায় পর্শ্বি মৌজার আর এস ৪৩২, ৪০২, ৮১, ৬০ এর হিস্যায় ৪৫ শতক জমি রয়েছে। যার কিছু অংশ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের অধীনে ছিলো। বাকি অংশ রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন আওতায় তাদের ভোগ দখলে রয়েছে। এদিকে পূর্বাচলের অভ্যন্তরের জমির বিল না তোলায় আলমপুরা ফকির পাড়ার বর্তমান বাগবের গ্রামের মৃত আফজালের ছেলে রুহুল আমিন তাদের জমির পরিবর্তে রাজউক থেকে প্লট বরাদ্দ করে দেয়ায় কথা বলে। এ সময় তারা প্লট পাওয়ার আশায় রহুলের কথা মতো রূপগঞ্জ সাবরেজিস্টার অফিসে একটি দলিল সম্পাদন করেন। কিন্তু কিছুদিন পর ওই দলিলের নকল তুলে দেখতে পান, তাদের বসতঘরসহ ২৫ শতক জমি পাওয়ার রেজিষ্ট্রেশন করে আত্মসাৎ করে নেয় রুহুলের নামে। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানা ও নারায়ণগঞ্জ আদালতে পৃথক মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের মালিকানায় থাকা কেয়ারিয়া মৌজার একটি জমি জাতীয় পরিচয় পত্র নকল করে ভুয়া দাতা সাজিয়ে আত্মসাৎ করে নেয় প্রতারক রুহুল। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি প্রতারনা মামলা রুজু রয়েছে। এর আগে সবুজবাংলা মাল্টিপারপাস সমবায় সমিতি নামে একটি এনজিও খুলে ব্যাংকিং কায়দায় এফডিআর করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। এর মাঝে গোয়ালপাড়ার বাসিন্দা নিলুফার জমি বিক্রির ১৬ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে প্রতারক রুহুল। একইভাবে মধুখালীর নারগীসের ৯ লাখ, গোয়ালপাড়ার শিরিনার ৩ লাখসহ শতাধিক গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে। সে সময় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও টেলিভিশনে তার বিরুদ্ধে প্রতারণার সংবাদ প্রচার হলে কিছু গ্রাহক টাকা ফেরত পেলেও গত ৬ বছরেও ৯০ ভাগ সদস্য তাদের আমানত ফেরত পায়নি। এসব ঘটনায় ১২ টির অধিক অর্থ ঋণ আদালত ও প্রতারনার অভিযোগে মামলা চলমান রয়েছে রুহুলের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় বিভিন্ন মামলায় একাধীকবার জেলও খেটেছেন তিনি।
স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, প্রতারক রুহুল বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি দাবীদার ছিলেন। পাশাপাশি ৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে তার অপকর্ম ঢাকতে আওয়ামীলীগের অঙ্গসংগঠন যুবলীগে যোগ দেয়। যোগ দিয়েই ইউনিয়ন যুবলীগে কোন্দল শুরু করেন। এতে স্থানীয় যুবলীগ নেতা কর্মীদের ক্ষোভের যেন শেষ নাই। তাকে কাগজে কলমে কোন কমিটিতে না রাখলেও নিজেকে ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি দাবী করে আসছে। পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষমতাসীনদের সাথে সক্ষতা করে থানা পুলিশের দালালী করে বহু নিরীহদের ফাঁসানোর রয়েছে অভিযোগ। তার সমিতি থেকে পাওনা টাকা চাইতে গেলেও উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানী করে সে। ইতোমধ্যে এসব অপকর্ম করে রুহুল হয়ে ওঠে শতকোটি টাকার মালিক।
এসব বিষয়ে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমিতিতে ব্যাংকিং সিস্টেমে টাকা নিয়েছি সত্য আবার এ টাকা মানুষকে ঋণ দিয়েছি। ঋণের টাকা আটকে পড়ায় সমস্যায় পড়তে হয়েছিলো। বেশির ভাগ পাওনাদারের টাকা পরিশোধ করেছি। বাকিদের টাকাও পরিশোধ করবো। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনা অন্যাণ্য সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এসব বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। কিছু মামলায় সে জামিনে আছে। নতুন করে কেউ প্রতারিত হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল হক বলেন, এসব সংক্রান্তের ব্যপারে আমার জানা নেই। কেউ যদি লিখিত অভিযোগ দেয় তবে তদন্ত করে দেখবো।
এসকে মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত "প্রতিদিনের নিউজ ডটকম" হেড অফিস: ৫৩/এ নয়া পল্টন এক্সটেনশন রোড ঢাকা-১২০০। মোবাইল ০১৯৩০ ১৭২ ৫২০, ০১৩১৪ ১৬৮ ৬৪৪ । আঞ্চলিক অফিস: হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেট (নিচ তলা) চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। Email:protidinernews24@gmail
সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না