রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে নেত্রকোনার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে জেলার প্রায় ১১ হাজার ৮ শত ৮২ হেক্টর জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
গত তিন দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় জেলার নিম্নাঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ জমির রোপন কৃত আমন ধানের চারা তলিয়ে যায়। আজ শনিবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবং দ্রুত পানি নামতে শুরু করায় উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা আশা করছেন, তলিয়ে যাওয়া আমন ধানের চারা পূনরায় পনির উপর ভেসে উঠবে।
বারহাট্টা উপজেলার দশধার গ্রামের কৃষক সুবল সরকার জানান, এ বছর তিনি ৩০ কাঠা জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে ১৫-১৬ কাঠা জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এমনভাবে আরও কয়েকদিন বৃষ্টি থাকলে আমার পুরা জমির ধানই পানির নিচে তলিয়ে যাবে।
নেত্রকোনা সদর উপজেলার তাতিয়র গ্রামের কৃষক জব্বার মিয়া জানান, আমি ভাগে জমি চাষ করি। 'জমির মালিকের কাছ থেকে টাকা ধার করে এনে জমি লাগিয়েছি। আমার কপালই খারাপ। বৃষ্টির পানিতে জমি সব জমিই তলিয়ে গেছে'। মহাজনের টাকাই বা শোধ করবো কি করে? আর নিজের সংসারই বা চালাব কি করে? সবসময়ই এ দুঃশ্চিন্তাই করছি।
বারহাট্টা উপজেলার কৈলাটি গ্রামের মাছ চাষী বজলু মিয়া বলেন, আমার চারটা পুকুরের বেশীরভাগ মাছই পানিতে ভেসে গেছে। চারদিকে জাল দিয় বেড়া দিয়েও কোন উপায় হয় নাই।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, টানা তিন দিনের ভারী বর্ষণে প্রায় ১১ হাজার ৪ শত ৮২ হেক্টর জমির আবাদি আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে নেত্রকোনা সদরে ২ হাজার ৪৭০ হেক্টর, পূর্বধলায় ২ হাজার ৩৬০ হেক্টর, দুর্গাপুরে ৪৫ হেক্টর, কলমাকান্দায় ১৮০ হেক্টর, মোহনগঞ্জে ১ হাজার ২০০ হেক্টর, বারহাট্টায় ২১৫ হেক্টর, আটপাড়ায় ১ হাজার হেক্টর, মদনে ৫০০ হেক্টর, খালিয়াজুরীতে ১২ হেক্টর ও কেন্দুয়ায় ৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে।
তিনি কৃষকদের এখনই হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, দ্রুত পানি নেমে গেলে আমন ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।
নেত্রকোনা জেলা মৎস্য কর্মবর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, অতিবৃষ্টিতে জেলার ৭০৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আনুমানিক প্রায় ৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সারওয়ার জাহান জানান, শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত উব্দাখালি নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার মাত্র দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, ধনু নদীর পানি খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ১.৮০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে, সোমেশ্বরী নদী পানি বিজয়পুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫.২২ সেমি ও দুর্গাপুরে ২.৪০ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে ও কংশ নদীর পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২.৩৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এসকে মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত "প্রতিদিনের নিউজ ডটকম" হেড অফিস: ৫৩/এ নয়া পল্টন এক্সটেনশন রোড ঢাকা-১২০০। মোবাইল ০১৯৩০ ১৭২ ৫২০, ০১৩১৪ ১৬৮ ৬৪৪ । আঞ্চলিক অফিস: হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেট (নিচ তলা) চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। Email:protidinernews24@gmail
সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না