কয়রায় সিরাতুন্নবী (স:) উদযাপন
- আপডেট সময় : ০৯:১৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ অক্টোবর ২০২৩
- / ৮৩
মোক্তার হোসেন, খুলনা:
খুলনার কয়রা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বেজপাড়া হায়াতুন্নেছা দাখিল মাদরাসায় যথাযত ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিয়ে সিরাতুন্নবী (স:) ও অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার, ৪ আক্টোবর সকাল ১০ টায় মাদরাসার মিলনায়তন কক্ষে শিক্ষক কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিয়ে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্বের বিস্ময়, নবী ও রাসুলগণের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ, বিশ্বনবী হজরত আহমাদ মুজতবা মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)। যাঁর গুণকীর্তনে ভিন্ন ধর্মের মানুষেরা পর্যন্ত পঞ্চমুখ; কাফির–মুশরিক, দুশমনরাও যাঁকে ‘আল আমিন’ তথা মহাসত্যবাদী বা পরম বিশ্বাসী আখ্যায় আখ্যায়িত করতে কুণ্ঠাবোধ করেনি ,তাঁরই ধারাবাহিকতায় কয়রার বেজপাড়া হায়াতুন্নেছা দাখিল মাদরাসায় মনোরম পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় সিরাতুন্নবী ও অভিভাবক সমাবেশ।
প্রতিষ্ঠানের সুপার এ, কে,এম আজহারুল ইসলামের সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসমাইল হোসেন বাবলু।
সভাপতি উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। তাদের পড়ালেখার দিকে লক্ষ রাখতে হবে। পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে মহানবীর আদর্শ অনুসরণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করাতে হবে।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাওঃ এম,এ সালাম। তিনি যুবক মহানবী (সা.) এর বিষয়ে তাৎপর্য তুলে ধরতে বলেন, পৃথিবীতে যত ভালো গুণ আছে এর সব গুণে গুণান্বিত ছিল মহানবী (সা:)। কখনও তিনি আমোদ ফুর্তি ও বিনোদনের মাধ্যমে জীবন কাটাতেন না। মহানবী (সা:) ছিলেন উত্তম আদর্শ ও মহামানব। কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে এমন আদর্শ অনুসরণের প্রতি ইঙ্গিত দেন।সহকারী শিক্ষক মোক্তার হোসেন ও আবদুর রউফের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচনা রাখেন, মাওঃ আব্দুল খালেক, মাওঃ আব্দুল হক, মাওঃ সাজ্জাদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, ক্বারী নূরুল হক। সিরাতুন্নবী (সা.) অর্থাৎ নবী (সা.) এর জীবনচরিত বা জীবনী নিয়ে আলোচনা রাখেন প্রতিষ্ঠানের সুপার এ,কে,এম আজহারুল ইসলাম। তিনি তার উন্মুক্ত আলোচনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। দেশ গড়ার জন্য প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে না পারলে জাতি হিসেবে আমরা পিছিয়ে যাব। ঘুম থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত শিশুরা কি করে কোথায় যায় সে দিকটা দেখতে অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান।
পবিত্র সিরাতুন্নবী (স:) বিষয়ে তাৎপর্য তুলে ধরে, প্রতিষ্ঠানের সহ-সুপার আব্দুল খালেক বলেন, সৃষ্টির জন্য যাঁদের সৃষ্টি, তাঁরা চির অমর। তা-ই হোক, তবু প্রিয় নবী (সা.) আজ দুনিয়ার বুকে নেই, সেটিই ভাবার বিষয়। যা-ই হোক, উৎসব বা শোক পালন বড় কথা নয়; আসল কথা হলো তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা; কোরআন ও সুন্নাহ আঁকড়ে ধরা; একমাত্র ইসলামকেই ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির অনন্য পথ হিসেবে গ্রহণ করা।
মাওঃ আব্দুল হক বলেন, মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্য হলো আল্লাহর পরিচয় লাভ করা। নবী-রাসুল প্রেরণের লক্ষ্য হলো মানুষকে আল্লাহর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। তাই আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে রাসুল (সা.)-এর পথ অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ রাসুল (সা.) যা যা করেছেন বা করতে বলেছেন, তা করতে হবে। আর যা করেননি বা করতে নিষেধ করেছেন, তা বর্জন করতে হবে।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও জীবনী আলোচনা করতে মাওঃ সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন,সিরাতুন্নবী (সা.)-এর আসল শিক্ষা হলো—মহানবী (সা.)-এর ২৩ বছরের ভালোবাসার, কঠোর সাধনার পরিপূর্ণ ও একমাত্র গ্রহণযোগ্য ধর্ম বা জীবনবিধান ইসলামকে পূর্ণাঙ্গরূপে সর্বস্তরে বাস্তবায়নের মাধ্যমে শান্তির ধর্ম ইসলামকে সগৌরবে প্রতিষ্ঠা করা। আর এটাই নবী বা রাসুল প্রেরণের মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারী, শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, এলাকার সুধী, অভিভাবক ও বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ। বিশ্বের সকল মুসলিম নরনারীদের বিদ্বেয়ী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দেশ ও জাতির শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে মিষ্টান্ন বিতরণ করা হয়।