আবু জাফর চৌধুরী বিরুর বিরুদ্ধে ফের সমালোচনার ঝড়
- আপডেট সময় : ০১:২৩:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩
- / ৫২
প্রতিদিনের নিউজ:-
সমালোচনা পিছু ছাড়ছে না মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি, বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির প্রয়াত সভাপতি ড. মিয়া আব্বাস উদ্দিনের শেলক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু কে। ডা.বিরু চৌধুরীর বড় বোন সেতেরার স্বামী মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি মিয়া আব্বাস উদ্দিন।
১৯৯০ সালে মিয়া আব্বাস উদ্দিন বাংলাদেশ বিএনপিতে যোগ দিয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১৪ সালে সপরিবারে কানাডায় চলে যায়। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর কানাডার অটোয়ার একটি হাসপাতালে ব্রেইন টিউমার ও বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। কানাডাতেই তাকে দাফন করা হয়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি বড় বোন সেতেরার স্বামী মিয়া আব্বাসের কানাডার বাড়িতে অবস্থান করেন।
যদিও সেখানে যাওয়ার পূর্বে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু কানাডার অন্য একটি স্থানে থাকবেন বলে তার ফেসবুক আইডিতে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।
লোক মুখে শোনা যায়, মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার আসামি মিয়া আব্বাসের সমস্ত অবৈধ টাকার বিশ্বস্ত ক্যাশিয়ার ছিলেন ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু। সেই সুবাদে শতশত কোটি টাকার হয়েছেন শেলক ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু।
উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের উটমা গ্রামের আবু জাফর চৌধুরী বিরুর পিতা মৃত নূর মোহাম্মদ চৌধুরী চারটি বিয়ে করেন। তার পিতা নূর মোহাম্মদ চৌধুরীর তৃতীয় স্ত্রীর সন্তান ছেলে সোনারগাঁ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক লিপন চৌধুরী পার্শ্ববর্তী আমবাগ গ্রামের আরজু দেওয়ানের স্ত্রীর সাথে পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ওর নারীকে নিয়ে কক্সবাজার সহ দেশের বিভিন্ন রিসোর্টে মনোরঞ্জন করে সময় কাটান। যার অন্তরঙ্গ দৃশ্যে ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল সহ বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
বিষয়টিনিয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয়। যা সোনারগাঁ সহ নারায়ণগঞ্জ জেলায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এছাড়া ডা.আবু জাফর চৌধুরী বিরুর পিতাও নূর মোহাম্মদ চৌধুরী নিজেও রাজাকার ছিলেন। তার আরেক বোনের স্বামী নারায়ণগঞ্জ জেলা জামায়াতের ইসলামীর শীর্ষ নেতা। আরেক ভাই সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয় পার্টির নেতা। যা বিভিন্ন সময়ে দেশের বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় পত্রিকা সহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল সংবাদ প্রকাশিত হয়। এতো সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রতিক প্রত্যাশী ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু।
এসব সমালোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর দুই সহযোগী র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে মোবাইল ব্যবসায়ীর ২৮৩ পিস মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হলে ডা. বিরু ফের সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা কোতয়ালী থানার রাইস গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মোবাইল ব্যবসায়ী মো: সুমন তার মো: সাইদ নামের এক সহযোগীকে সঙ্গে করে বিভিন্ন ব্রান্ডের ২৮৩টি মোবাইল সেট (যার বাজার মূল্য ৪০ লাখ ১০ হাজার ৪৫ টাকা) নিয়ে প্রাইভেটকার যোগে ঢাকায় যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা অতিক্রম করার সময়
ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সহযোগী সোনারগাঁ পৌর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মাহবুবুর রহমান রবিন ও বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাজু, অলি সহ অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিজের নিজেদের র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে মোটরসাইকেল যোগে প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে। এবং গাড়িতে অবৈধ মালামাল রয়েছে বলে হুমকি প্রদান করে।
একপর্যায়ে তল্লাশির নামে প্রাইভেটকারে উঠে তারা গাড়ীর নিয়ন্ত্রন নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুড়িয়ে মহাসড়কের কাঁচপুর এলাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধর করে তাদের সাথে থাকা ২৮৩টি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নিয়ে নেমে পালিয়ে যায়।
পরিচয় জানতে পেরে ব্যবসায়ীরা তাদের কাছে মোবাইলগুলো ফেরত নেওয়ার জন্য ধর্ণা দেয়। মোবাইল ফোনগুলো ফেরত না দেওয়ায় ১১দিন অপেক্ষা করে ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে ওই ব্যবসায়ী সুমন বাদি হয়ে ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরুর সহযোগী মাহবুবুর রহমান রবিন, শাহরিয়ার খাঁন সাজু, অলির নাম উল্লেখ করে ও একজনকে অজ্ঞাত আসামি করে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর ওই রাতেই পুলিশ পৌরসভার খাসনগর দিঘির পাড় রয়্যাল রিসোর্টের সামনে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। পরদিন ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে প্রেরণ করেন।
এই ঘটনায় সোনারগাঁ সহ নারায়ণগঞ্জ জেলার সর্বত্র ডা. আবু জাফর চৌধুরী বিরু কে নিয়ে ফের সমালোচনার ঝড় বইছে।