১০:১২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

দুবাইতে অগ্নিদগ্ধের ২৩ দিন পর বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ১০:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০৯

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

দুবাইয়ের শারজাহ এলাকায় অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় ২৩ দিন পর বাংলাদেশী যুবক মো. ইউছুফ হোসেনের (৩৯) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাঁর ভাই দুবাই প্রবাসী দিদার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসছে। তাঁর মা মাহফুজা খাতুন ও স্ত্রী আছমা বেগম কান্নায় মুর্চা যাচ্ছেন।
ইউছুফ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লাহারকান্দি গ্রামের শামছুদ্দিন বেপারী বাড়ির মো. আবদুল্যাহর সেজো ছেলে। ৯ আগস্ট দুবাইয়ের শারজাহ এলাকার একটি কারখানায় কাজ করার সময় অগ্নিকাণ্ডে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এরপর থেকে তিনি শারজাহ এলাকায় কুয়েতি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইউছুফের মা মাহফুজা খাতুন, ভাই দিদার হোসেন ও স্ত্রী আছমা বেগম জানায়, ২ বছর চার মাস আগে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ইউসুফ চাকরি খুঁজতে দুবাই যান। ভিজিট ভিসায় তিনি সেখানে যান। কিন্তু আকামা না থাকায় তিনি বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। বাড়িতেও ঠিকমতো টাকাপয়সা পাঠাতে পারতো না। দুবাইয়ের শারজাহ এলাকার একটি কারখানায় ৯ আগস্ট কাজ করার সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তিনি সেখানে অগ্নিদগ্ধ হন। আগুনে তার শরীরের অধিকাংশ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সেখানকার কুয়েতি হাসপাতালে ২৩ দিন তিনি নিবীড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) ছিলেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ইউছুফের ভাই দিদার হোসেন বলেন, ইউছুফের মরদেহ দেশে আনার জন্য চেষ্টা করছি। আকামা না থাকায় একটু সময় লাগতে পারে।

ইউছুফের মা মাহফুজা বেগম বলেন, ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ইউছুফ বিদেশে গেছে। এখনো সবগুলো টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এরমধ্যেই আমার ছেলেটা আগুনে পুড়ে মারা গেল। সংসারে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১১) ও তাহসিন (৫) রয়েছে। আমার নাতিগুলো এতিম হয়ে গেলে। শেষবারের মতো আমরা ইউছুফের মুখটা দেখতে চাই। এতে তাকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
স্ত্রী আছমা বেগম বলেন, অভাব গোছাতে ইউছুফ আমাদের ছেড়ে বিদেশ গেল। সেখানে তিনি প্রকাশ্যে কাজ করতে পারতো না। লুকিয়ে কাজ করতে হতো থাকে। অভাব গোছাতে গিয়ে তিনি এখন আমাদেরকে অভাবী করে গেল। তাঁর অভাব কিভাবে গোছাবো আমরা?
লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আলমগীর হোসেন জানান, ইউছুফের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। তার মরদেহ দেশে আনতে পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগীতা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

দুবাইতে অগ্নিদগ্ধের ২৩ দিন পর বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু

আপডেট সময় : ১০:৩৫:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি:

দুবাইয়ের শারজাহ এলাকায় অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় ২৩ দিন পর বাংলাদেশী যুবক মো. ইউছুফ হোসেনের (৩৯) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাঁর ভাই দুবাই প্রবাসী দিদার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এরআগে শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে সেখানকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসছে। তাঁর মা মাহফুজা খাতুন ও স্ত্রী আছমা বেগম কান্নায় মুর্চা যাচ্ছেন।
ইউছুফ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার লাহারকান্দি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লাহারকান্দি গ্রামের শামছুদ্দিন বেপারী বাড়ির মো. আবদুল্যাহর সেজো ছেলে। ৯ আগস্ট দুবাইয়ের শারজাহ এলাকার একটি কারখানায় কাজ করার সময় অগ্নিকাণ্ডে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে যায়। এরপর থেকে তিনি শারজাহ এলাকায় কুয়েতি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ইউছুফের মা মাহফুজা খাতুন, ভাই দিদার হোসেন ও স্ত্রী আছমা বেগম জানায়, ২ বছর চার মাস আগে ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ইউসুফ চাকরি খুঁজতে দুবাই যান। ভিজিট ভিসায় তিনি সেখানে যান। কিন্তু আকামা না থাকায় তিনি বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। বাড়িতেও ঠিকমতো টাকাপয়সা পাঠাতে পারতো না। দুবাইয়ের শারজাহ এলাকার একটি কারখানায় ৯ আগস্ট কাজ করার সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে তিনি সেখানে অগ্নিদগ্ধ হন। আগুনে তার শরীরের অধিকাংশ পুড়ে যায়। এ ঘটনায় তার সঙ্গে আরও কয়েকজন অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সেখানকার কুয়েতি হাসপাতালে ২৩ দিন তিনি নিবীড় পর্যবেক্ষণে (আইসিইউ) ছিলেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ইউছুফের ভাই দিদার হোসেন বলেন, ইউছুফের মরদেহ দেশে আনার জন্য চেষ্টা করছি। আকামা না থাকায় একটু সময় লাগতে পারে।

ইউছুফের মা মাহফুজা বেগম বলেন, ৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ইউছুফ বিদেশে গেছে। এখনো সবগুলো টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। এরমধ্যেই আমার ছেলেটা আগুনে পুড়ে মারা গেল। সংসারে তার স্ত্রী, দুই ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১১) ও তাহসিন (৫) রয়েছে। আমার নাতিগুলো এতিম হয়ে গেলে। শেষবারের মতো আমরা ইউছুফের মুখটা দেখতে চাই। এতে তাকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
স্ত্রী আছমা বেগম বলেন, অভাব গোছাতে ইউছুফ আমাদের ছেড়ে বিদেশ গেল। সেখানে তিনি প্রকাশ্যে কাজ করতে পারতো না। লুকিয়ে কাজ করতে হতো থাকে। অভাব গোছাতে গিয়ে তিনি এখন আমাদেরকে অভাবী করে গেল। তাঁর অভাব কিভাবে গোছাবো আমরা?
লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) আলমগীর হোসেন জানান, ইউছুফের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। তার মরদেহ দেশে আনতে পরিষদের পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগীতা করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন