বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা, সমঝোতার পর হলে ফিরল ছাত্রলীগ কর্মীরা
- আপডেট সময় : ০৮:৪২:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৩
- / ৫৯
মোঃ রানা সন্যামত বরিশাল:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) দুটি হলে হেলমেট পরে হামলা করার ঘটনার সাত দিন পর ছাত্রাবাসে ফিরেছে ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি পক্ষ। গতকাল শনিবার বিকেলে নবনির্বাচিত মেয়র এবং প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে সমঝোতার পর রাতেই দুই পক্ষ হলে অবস্থান নেয়। যদিও ওই হামলায় ছাত্রলীগের উভয় পক্ষের ১২ কর্মী গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে একজনের রগ কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে থানায় দুটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এদিকে হামলার পর রাজনৈতিক সমঝোতা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদকর্মীরা খবর পরিবেশনে হুমকি ও চাপের মুখে পড়েছেন।জানা গেছে, গতকাল বিকেলে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ ওরফে খোকন সেরনিয়াবাত এবং পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের নির্দেশে ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপ সমঝোতায় বসে।
সমঝোতা অনুযায়ী গতকাল রাতেই রক্তিম-বাকি গ্রুপ শেরে বাংলা হলে এবং রিদম-মঞ্জু গ্রুপ বঙ্গবন্ধু হলে অবস্থান নেয়।ছাত্রলীগের একাংশের কর্মী অমিত হাসান রক্তিম বলেন, ‘নবনির্বাচিত মেয়র এবং প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক সমঝোতার উদ্যোগ নেন। সে অনুযায়ী থানায় দায়ের করা অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু রগ কেটে দেওয়া আয়াত উল্লাহর বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি দাবি করেন, হামলায় তাঁদের অনেকে গুরুতর আহত হলেও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে সহাবস্থান নিশ্চিত করছেন।
ছাত্রলীগের অপরাংশের কর্মী মোবাশ্বের রিদম বলেন, ‘নবনির্বাচিত মেয়র সমঝোতা করে দেওয়ায় আমরা সহাবস্থান আছি।’ তিনি দাবি করেন, কোনো গণমাধ্যমকর্মীকে হুমকি দেননি এবং সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করেননি।
জানতে চাইলে শেরে বাংলা হলের প্রভোস্ট আবু জাফর মিয়া বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নবনির্বাচিত মেয়র ও প্রতিমন্ত্রীর পরামর্শে বিবদমান পক্ষগুলোকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়।
আলোচনা অনুযায়ী একপক্ষকে শেরে বাংলা হলে এবং অন্য পক্ষকে বঙ্গবন্ধু হলে অবস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মার্কেটিং শেষ বর্ষের ছাত্র আয়াত উল্লাহর যে অঙ্গহানি হয়েছে এর চিকিৎসা খরচ মেটানো হবে।
এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসক্লাব আজ রোববার এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, ৫ আগস্ট শেরে বাংলা ও বঙ্গবন্ধু হলে গভীর রাতে হেলমেট পরা দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়।
ওই সংবাদ পরিবেশ করায় ছাত্রলীগ নেতা পরিচয়দানকারীরা সংবাদকর্মীদের অযাচিত প্রশ্ন করছেন। ফেসবুক থেকে সংবাদ মুছে ফেলতে চাপ দিচ্ছেন।গতকাল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিক মুন্সীকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি উল্লেখ করেছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অপমানজনক এবং উদ্বেগের।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শফিককে ছাত্রলীগ নামধারীরা হুমকি দিচ্ছেন। ৫ আগস্ট শেরে বাংলা হলে হামলার ভিডিও ধারণ করায় কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মীকেও হুমকি দিয়ে সব ধরনের সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে মুছে ফেলার জন্য চাপ দিয়েছে। ৫ আগস্ট গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। যদিও প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ববিতে ছাত্রলীগের কোনো নেতৃত্ব নেই।