একটি সেতুর অভাবে ১০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ
- আপডেট সময় : ০৬:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ জুলাই ২০২৩
- / ৬১
আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:
ডিজিটাল বাংলাদেশ পেড়িয়ে আজ আমরা পর্দাপণ করতে যাচ্ছি (স্মার্ট) বাংলাদেশে। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী মহিষতুলি ঝাড়িঝাড় এলাকায় রত্নাই নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে ১০ গ্রামবাসীর কয়েক হাজার জনগণ দুর্ভোগের স্বীকার। রত্নাই নদীটি ভারতে সাথে সংযুক্ত থাকায় প্রায় সময় বন্যা দেখা দেয় ওই এলাকা, বেশির ভাগ সময় পানি থাকে নদীটিতে, ফলে খেঁয়াঘাট দিয়ে ১০ গ্রামের হাজার হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও রত্নাই নদীর ওপর আজও হয়নি সেতু নির্মান। বিভিন্ন দলীয় নেতাগন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগন শুধু আসায় দিয়ে গেলেন। “তাই নিভৃতে কাঁদে আসার বাণী”। সেতুটির অভাবে ওই ১০ গ্রাম এলাকার হাজার হাজার মানুষের কষ্টে সীমা নেই। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় নৌকায়। শুকনো মৌসুম আসলে চলাফেরা করতে হয় বাঁশের তৈরি সাকোঁতে। বাঁশের তৈরী সাকো দিয়ে মটরসাইকেল, বাইসাইকেল, অটোরিকশা নিয়ে চরম আতঙ্কে পারাপার করতে হয় তাদের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ভারতের সিমান্তবর্তী জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষতুলি ঝাড়িঝাড় এলাকাটি হতে আদিতমারী উপজেলার দুরত্ব প্রায় ১৫ কিঃ মিঃ। লালমনিরহাট সদর এলাকার দুরত্ব প্রায় ২২ কিঃ মিঃ, কালীগঞ্জের দুরত্ব প্রায় ৩০ কিঃ মিঃ। সেতুটির অভাবে সদরের মোঘলহাট ইউনিয়ন, আদিতমারীর দুর্গাপুর ইউনিয়ন, ভেলাবাড়ী ইউনিয়নে কালীগঞ্জের ৪ টি ইউনিয়নসহ, কালিরহাট বাজার, দুলালী বাজার, হাজিগঞ্জ বাজার, ফলিমারী বাজার, আমেনা বাজার ও মহিষতুলিসহ আরো অনেক এলাকার কয়েক হাজার মানুষ বিকল্প উপায়ে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে মোটরসাইকেল, রিকসা ও ভ্যানযোগে বিভিন্ন উপজেলায় আসতে হয়। ওই এলাকা পুর্বপাশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পশ্চিমে পাশে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। প্রতিদিন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থী ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া ছাত্র/ছাত্রীরা বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। আবার শুকনো মৌসুমে বাঁশের তৈরি নড়বড়ে সাকো পারি দিয়ে স্কুলে যেতে হয়। এ ভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা
চলছে বছরের পর বছর। এমতাবস্থা চলতে থাকলে যে কোন মহুর্তে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন ওই এলাকার স্থানীয়রা।
মহিষতুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র/ ছাত্রীরা বলেন, সেতুটির অভাবে কোন প্রকার যানচলাচল করতে পারে না, প্রতি নিয়ত আমাদের পায়ে হেটে স্কুলে যেতে হয়। তাই বর্ষা কালে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে বাঁশের তৈরি নড়বড়ে সাকো আমাদের একমাত্র ভরসা।
মহিষতুলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,এই রত্নাই নদীর ওপর সেতু না থাকায় শতাধিক স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসে। আবার ভরা বর্ষার মৌসুমে অনেক অবিভাবক তাদের ছেলে/মেয়েদের জীবন ঝুঁকি মনে করে নৌকা পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে দেয় না। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সরকারী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন বিভিন্ন সময় সেতুটির জন্য মাপযোগ নিয়ে যায় এবং বিভিন্ন জনপ্রতিনিরা সেতুটি তৈরির জন্য আশ্বাস দেয়। বাস্তবে সেতুটি নির্মান হবে কি না আমরা আজও তা বুঝতে পারিনি। শুধু আসার বাণী শুনে আসছি স্বাধীনতার পর থেকে। তাই এই এলাকার সাধারণ জনগণ ছাত্র /ছাত্রী সকলের দাবী অতি তারাতাড়ি সেতুটি নির্মান করে এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্হা প্রসারিত হবে বলে মনে করছি।
ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, মহিষতুলি ঝাড়িঝাড় এলাকার খেঁয়া ঘাটটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সেতু না থাকায় ৪ টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ কষ্ট করছে। সিমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় বিজিবি সদস্যদের চলাচল ও স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এই ঘাটে সেতু নির্মানের জন্য আমি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে কোন সুফল পাইনি। অত্র এলাকার লোকজনের কষ্ট দুর করতে সেতুটি নির্মানে জন্য আমি সরকারের নিকট জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর কাদের ইসলাম বলেন, ওই সেতুর কাজের জন্য প্রস্তাবনা ওপরে পাঠানো হয়েছে অনুমোদন আসলে কাজ শুরু হবে।