০৬:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫

চরের অরক্ষিত অঞ্চলকে সুরক্ষিত করতে পুলিশ ফাঁড়ি হচ্ছে বাহেরচরে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
  • / ৬৬

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মতলব উত্তর ব্যুরো:

মতলব উত্তরের মেঘনা নদীর ওপারে থাকা দূর্গম চরাঞ্চলে বিভিন্ন সময় নানান ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। মামলা-মোকদ্দমার তদন্ত ছাড়া চরাঞ্চলে পুলিশের তেমন একটা যাওয়া পড়ে না। ফলে অপরাধীদের ধরতে এবং এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মানুষের জানমাল রক্ষায় দূর্গম চরাঞ্চলে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি হচ্ছে। বাহেরচরে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মিত হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার আওতাধীন ৭নং মোহনপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে বাহেরচর গ্রামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থায়ী ভাবে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর বাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে জমি ভরাটের কাজের উদ্বোধন করা হয়।
জানা যায়, ডাকাতরা পূর্বের ডাকাতির ধারাবাহিকতায় ১৮ মে ২০২০ ইং তারিখে ভোর রাতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়, হামলায় প্রায় পঞ্চাশটি বসতঘর ভাঙচুর করে এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা ৭-৮ জনকে মারাত্মক জখম করে। ইতিমধ্যে ইউএনও মতলব উত্তর, এসপি সার্কেল, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বাহেরচর একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেন।
এছাড়াও চলতি বছরে স্পীটবোট যোগে একটি গরুর ট্রলারে ডাকাতি করে পালানোর সময় নগত ৩৪ লক্ষ টাকা, দেশীয় অস্ত্রসহ ৭ ডাকাতকে আটক করেন পুলিশ। এছাড়া আরও ১০/ ১৫টি ছোট বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে শুধু চলতি বছরে। গত তিন মাসে ১৫-১৬টি গরু লুট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ২রা জুন ২০২০ইং তারিখে আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল এমপি চরাঞ্চলে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য ডিও লেটার দেন। এরই পেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ, হেড কোয়ার্টারের আডিশনাল ডিআইজি (ওঅ্যাণ্ডএম) এনএন আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষরিত পত্রে জানানো হয় মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল এর ডিও লেটার মোতাবেক বাহেরচরে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়।
উক্ত ডিও লেটারটি গত ২ জুন ২০২০ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রদান করা হলে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে ১১ জুন ২০২০ তারিখে গ্রহণ করে। ১৮ জুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার ঢাকার আডিশনাল ডিআইজি (ওএন্ডএম) আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষর করে স্থায়ীভাবে বাহেরচর পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদেশ জারি করেন।
বাহেরচরের স্থায়ী বাসীন্দা মোহনপুর ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন জানান, আমরা প্রায় ৪০ বছর ধরে এই চরে বসবাস করে আমরা বিভিন্ন সময়ে বহুবার ডাকাতির কবলে পড়েছি। আমাদের গরু- ছাগল, জমির ফসল, স্বর্ণলংকার,টাকা পয়সা ডাকাতরা নিয়ে গেছে এবং আমাদের বসতঘর ভাংচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছে ডাকাতরা। মেহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানের আপ্রাণ চেষ্টায় পুলিশ ফাঁড়ির জমি ভরাটের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান বলেন, বাহেরচর মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলা সীমানায়। মেঘনা ও পদ্মা নদীর তীরে। বিভিন্ন সময় মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর থেকে ডাকাত দল বাহেরচরে ডাকাতি’সহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত করে থাকে। পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ হলে ডাকাতিসহ সবধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থাকবে স্বাভাবিক। যার ফলে পালটে যাবে চরাঞ্চলবাসীর জীবন মান উন্নয়ন। আমি চাই একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের মাধ্যমে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের অরক্ষিত অঞ্চলকে সুরক্ষিত করে চরাঞ্চলবাসীকে উন্নয়নের মূলপ্রবাহে নিয়ে এসে মোহনপুর ইউনিয়নকে বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ দৃষ্টিনন্দন একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের বিষয়টি চলমান আছে। জমি ভরাটের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। জমি ভরাট হলে কিছুদিনের মধ্যেই প্রথমে টিন সেট করে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন কর হবে। আশা করছি পরবর্তিতে সরকারী বরাদ্ধ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুলিশ ফাঁড়ির ভবন নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

চরের অরক্ষিত অঞ্চলকে সুরক্ষিত করতে পুলিশ ফাঁড়ি হচ্ছে বাহেরচরে

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ জুন ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মতলব উত্তর ব্যুরো:

মতলব উত্তরের মেঘনা নদীর ওপারে থাকা দূর্গম চরাঞ্চলে বিভিন্ন সময় নানান ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে। মামলা-মোকদ্দমার তদন্ত ছাড়া চরাঞ্চলে পুলিশের তেমন একটা যাওয়া পড়ে না। ফলে অপরাধীদের ধরতে এবং এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মানুষের জানমাল রক্ষায় দূর্গম চরাঞ্চলে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি হচ্ছে। বাহেরচরে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মিত হচ্ছে।
চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার আওতাধীন ৭নং মোহনপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে বাহেরচর গ্রামে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক স্থায়ী ভাবে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে মোহনপুর ইউনিয়নের বাহেরচর বাজার সংলগ্ন রাস্তার পাশে জমি ভরাটের কাজের উদ্বোধন করা হয়।
জানা যায়, ডাকাতরা পূর্বের ডাকাতির ধারাবাহিকতায় ১৮ মে ২০২০ ইং তারিখে ভোর রাতে ঘুমিয়ে থাকা মানুষের উপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়, হামলায় প্রায় পঞ্চাশটি বসতঘর ভাঙচুর করে এবং ধারালো অস্ত্র দ্বারা ৭-৮ জনকে মারাত্মক জখম করে। ইতিমধ্যে ইউএনও মতলব উত্তর, এসপি সার্কেল, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বাহেরচর একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেন।
এছাড়াও চলতি বছরে স্পীটবোট যোগে একটি গরুর ট্রলারে ডাকাতি করে পালানোর সময় নগত ৩৪ লক্ষ টাকা, দেশীয় অস্ত্রসহ ৭ ডাকাতকে আটক করেন পুলিশ। এছাড়া আরও ১০/ ১৫টি ছোট বড় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে শুধু চলতি বছরে। গত তিন মাসে ১৫-১৬টি গরু লুট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
জানা যায়, ২রা জুন ২০২০ইং তারিখে আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল এমপি চরাঞ্চলে একটি পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য ডিও লেটার দেন। এরই পেক্ষিতে বাংলাদেশ পুলিশ, হেড কোয়ার্টারের আডিশনাল ডিআইজি (ওঅ্যাণ্ডএম) এনএন আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষরিত পত্রে জানানো হয় মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নুরুল আমিন রুহুল এর ডিও লেটার মোতাবেক বাহেরচরে স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য বলা হয়।
উক্ত ডিও লেটারটি গত ২ জুন ২০২০ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রদান করা হলে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দপ্তরে ১১ জুন ২০২০ তারিখে গ্রহণ করে। ১৮ জুন পুলিশ হেডকোয়ার্টার ঢাকার আডিশনাল ডিআইজি (ওএন্ডএম) আক্তারুজ্জামান স্বাক্ষর করে স্থায়ীভাবে বাহেরচর পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য আদেশ জারি করেন।
বাহেরচরের স্থায়ী বাসীন্দা মোহনপুর ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন জানান, আমরা প্রায় ৪০ বছর ধরে এই চরে বসবাস করে আমরা বিভিন্ন সময়ে বহুবার ডাকাতির কবলে পড়েছি। আমাদের গরু- ছাগল, জমির ফসল, স্বর্ণলংকার,টাকা পয়সা ডাকাতরা নিয়ে গেছে এবং আমাদের বসতঘর ভাংচুর করে জ্বালিয়ে দিয়েছে ডাকাতরা। মেহনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমানের আপ্রাণ চেষ্টায় পুলিশ ফাঁড়ির জমি ভরাটের কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান কাজী মিজানুর রহমান বলেন, বাহেরচর মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর জেলা সীমানায়। মেঘনা ও পদ্মা নদীর তীরে। বিভিন্ন সময় মুন্সিগঞ্জ ও শরিয়তপুর থেকে ডাকাত দল বাহেরচরে ডাকাতি’সহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘঠিত করে থাকে। পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণ হলে ডাকাতিসহ সবধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থাকবে স্বাভাবিক। যার ফলে পালটে যাবে চরাঞ্চলবাসীর জীবন মান উন্নয়ন। আমি চাই একটি স্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের মাধ্যমে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের অরক্ষিত অঞ্চলকে সুরক্ষিত করে চরাঞ্চলবাসীকে উন্নয়নের মূলপ্রবাহে নিয়ে এসে মোহনপুর ইউনিয়নকে বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ দৃষ্টিনন্দন একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহিউদ্দিন জানান, পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে, পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের বিষয়টি চলমান আছে। জমি ভরাটের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। জমি ভরাট হলে কিছুদিনের মধ্যেই প্রথমে টিন সেট করে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন কর হবে। আশা করছি পরবর্তিতে সরকারী বরাদ্ধ পেলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পুলিশ ফাঁড়ির ভবন নির্মানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন