রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা)
নেত্রকোনার বারহাট্টায় আগাম জাতের পাকা আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছেন কৃষকরা। ধানের আশানুরূপ ফলন হওয়ায় কৃষক-কৃষাণীর চোখে-মুখে আনন্দের ঝিলিক। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে ধানের দাম নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন কৃষকেরা। আগাম জাতের ধানের সোনালী শীষে ভরে গেছে কৃষকের স্বপ্নে বুনা ফসলের মাঠ, বাতাসে ঢেউ তুলছে সোনালী ধানের শীষ। ধান কাটা ও মাড়াই কাজে কৃষকের পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে দিন শ্রমিকদেরও। এ বছর আমন ধান লাগানোর শুরুতেই অনাবৃষ্টি আর শেষের দিকে পোকার আক্রমণে অনেকটাই চিন্তিত ছিলেন কৃষকরা। তবে শেষ পর্যন্ত আশানুরূপ ফলন পেয়ে দারুণ খুশি কৃষক।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকা ও উল্লেখযোগ্য সার সংকট না হওয়ার কারণে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। এ ছাড়াও সংসারের খোরাকী, গরুর খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদা বৃদ্ধি ও ধানের দাম ভালো থাকায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, নবান্নের আনন্দে নতুন ধান ঘরে তুলতে আগাম জাতের আমনের পাকা ধান কাটছে কৃষকরা। আবহাওয়া ভাল থাকায় পাকা ধান কেটে জমিতেই শুকানো হচ্ছে। ধান মাড়াই ও গোলায় উঠাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণী। কৃষকদের ধারণা, এবার বিঘা প্রতি প্রায় ১৬-২০ মণ হারে ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনে খুশিতে আত্মহারা নেত্রকোনার কৃষকরা।
উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষক মো. শামসুল হক জানান, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির উপর নির্ভর করে আমন ধান চাষাবাদ করা হয়ে থাকে। ফলে বোরো আবাদের চেয়ে তুলনামুলক আমনের আবাদে খরচ কম হয়ে থাকে। আমি উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ মোতাবেক এ বছর ২ বিঘা জমিতে বিনা-৭ জাতের আমন ধানের চাষ করেছি। এ ধানের ফলন প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়েছে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের গড়মা গ্রামের কৃষক তপন সরকার বলেন, শুরুতে অনাবৃষ্টি আর শেষের দিকে পোকার আক্রমণে চিন্তায় পরে গিয়েছিলাম ফসল ঘরে তোলা নিয়ে। ধানে কীটনাশক বেশী ব্যবহার করার কারণে এবার উৎপাদন খরচ একটু বেশী হয়েছে। এ বছর চালের বাজার চড়া থাকায় ধানের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও চলতি মৌসুমে মাঠ থেকে ধান কাঁটা ও মাড়াই এর জন্য শ্রমিকদের খরচ বাদ দিলে ভাল লাভ আশা করছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার ১২ হাজার ৮শ’ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ হয়েছে এবার। এ বছর উপজেলায় আগাম জাতের পাশাপাশি স্থানীয় জাতের আমন ধানের ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। ফলে আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছে উপজেলা কৃষি অফিস। ইতিমধ্যে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে মাঠে গিয়ে ধান কাটা শুরু করা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাকিবুল হাসান জানান, আমন মৌসুমে কম সময়ে অধিক ফলন হয় এমন জাতের ধানের আবাদ বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের পরামর্শে অনেক কৃষক পুরাতন জাতের পরিবর্তে আগাম ও স্বল্প মেয়াদী জাতের ধান আবাদে অগ্রসর হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে উপজেলায় আমনের নতুন জাতগুলোর প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। আগাম জাতের আমন ধান কর্তন করে কৃষকরা সেই জমিতে বোরো চাষের আগে আলু, সরিষাসহ রবিশস্য চাষ করতে পারবেন। এতে কৃষকের উৎপাদন ও আয় দুটোই বাড়বে।
এসকে মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত "প্রতিদিনের নিউজ ডটকম" হেড অফিস: ৫৩/এ নয়া পল্টন এক্সটেনশন রোড ঢাকা-১২০০। মোবাইল ০১৯৩০ ১৭২ ৫২০, ০১৩১৪ ১৬৮ ৬৪৪ । আঞ্চলিক অফিস: হাজী রজ্জব আলী সুপার মার্কেট (নিচ তলা) চিটাগাংরোড, সিদ্ধিরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ। Email:protidinernews24@gmail
সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না