০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫

জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প, ইউএনও-এসল্যিান্ডের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
  • / ৬৪

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা :

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জোরপূর্বক কৃষি জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রোববার (২৮ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে ভূক্তভোগী কার্তিক চন্দ্র অধিকারী এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় কার্তিকের ভাই বিকাশ চন্দ্র অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মাটি কেটে নেওয়ার ঘটনার বিচার চেয়ে কার্তিক অধিকারী চলতি বছরের ২ জানুয়ারি হাইকোর্টে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের মাধ্যমে রিট দায়ের করেন। এতে ২৫ জানুয়ারি বিচারক কেএম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলী বেঞ্চ বিষয়টি ২ মাসের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। কিন্তু ৪ মাস অতিবাহিত হলে ও এখনো পর্যন্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ঘটনাটি মীমাংসা করে দেননি। একই দাবিতে গত ১০ মে কার্তিক ফের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। একাধিকবার আবেদন করলেও জেলা প্রশাসক কোন ব্যবস্থা নেননি বলে জানান কার্তিক ও তার ভাই বিকাশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর রইছা খাতুন গংদের কাছ থেকে কার্তিক চন্দ্র অধিকারীর দাদা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর মৌজায় ১০ একর ৩৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এসএ খতিয়ানেও কৃষ্ণ চন্দ্রের নামেই জমিটি রেকর্ডভূক্ত হয়। এরপর থেকে তিনি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন। পরবর্তীতে ওয়ারিশ সূত্রে কৃষ্ণ চন্দ্রের ছেলে হরিহর অধিকারী ও ইন্দুভোষণ অধিকারী সমান ভাগে ৪ একর ৬০ শতাংশ জমির মালিক হন। হরিহরের মৃত্যুর পর তার জমির মালিক হন ৩ ছেলে কার্তিক, বিকাশ ও কানুলাল। এরমধ্যে ইন্দুভোষণের নামের কিছু জমি খাস খতিয়ানে চলে যায়। এনিয়ে ইন্দুভোষন ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে ২০২২ সালে মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী, সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউল হাসান কাজলের নির্দেশনায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. সানা উল্যাহ, চরগাজী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দিন, নারী ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগমের স্বামী মামুন মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি কার্তিকদের ৭০ শতাংশ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। কিন্তু এ জমি খাস ছিল না। এ জমি তারা বর্গাচাষীদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন। মাটি কেটে নেওয়ার সময় চাষীরা বাধা দিলে তাদেরকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।
কার্তিক চন্দ্র অধিকারী বলেন, আমাদের জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ হতো। কিন্তু মাটি কেটে নেওয়ায় ওই জমিটি এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত। খাস জমি থেকে আমরা মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করেছি। আমরা মালিকানাধীন কারো জমির মাটি কাটিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ওই জমির পাশেই ৭০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এখন ১৬ ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প, ইউএনও-এসল্যিান্ডের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

নাজিম উদ্দিন রানা :

লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জোরপূর্বক কৃষি জমির মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাটের ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) এর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। রোববার (২৮ মে) দুপুরে লক্ষ্মীপুর জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে ভূক্তভোগী কার্তিক চন্দ্র অধিকারী এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এসময় কার্তিকের ভাই বিকাশ চন্দ্র অধিকারীও উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে মাটি কেটে নেওয়ার ঘটনার বিচার চেয়ে কার্তিক অধিকারী চলতি বছরের ২ জানুয়ারি হাইকোর্টে আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মাহমুদের মাধ্যমে রিট দায়ের করেন। এতে ২৫ জানুয়ারি বিচারক কেএম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ আলী বেঞ্চ বিষয়টি ২ মাসের মধ্যে মীমাংসা করে দেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসককে নির্দেশনা দেন। কিন্তু ৪ মাস অতিবাহিত হলে ও এখনো পর্যন্ত জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ ঘটনাটি মীমাংসা করে দেননি। একই দাবিতে গত ১০ মে কার্তিক ফের জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। একাধিকবার আবেদন করলেও জেলা প্রশাসক কোন ব্যবস্থা নেননি বলে জানান কার্তিক ও তার ভাই বিকাশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, জমিদারী প্রথা বিলুপ্তির পর রইছা খাতুন গংদের কাছ থেকে কার্তিক চন্দ্র অধিকারীর দাদা কৃষ্ণ চন্দ্র অধিকারী রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের দক্ষিণ টুমচর মৌজায় ১০ একর ৩৬ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এসএ খতিয়ানেও কৃষ্ণ চন্দ্রের নামেই জমিটি রেকর্ডভূক্ত হয়। এরপর থেকে তিনি ওই জমির খাজনা পরিশোধ করেছেন। পরবর্তীতে ওয়ারিশ সূত্রে কৃষ্ণ চন্দ্রের ছেলে হরিহর অধিকারী ও ইন্দুভোষণ অধিকারী সমান ভাগে ৪ একর ৬০ শতাংশ জমির মালিক হন। হরিহরের মৃত্যুর পর তার জমির মালিক হন ৩ ছেলে কার্তিক, বিকাশ ও কানুলাল। এরমধ্যে ইন্দুভোষণের নামের কিছু জমি খাস খতিয়ানে চলে যায়। এনিয়ে ইন্দুভোষন ২০২০ সালে ৮ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে ২০২২ সালে মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী, সাবেক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রবিউল হাসান কাজলের নির্দেশনায় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. সানা উল্যাহ, চরগাজী ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নাছির উদ্দিন, নারী ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগমের স্বামী মামুন মিয়া ও দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যক্তি কার্তিকদের ৭০ শতাংশ জমি থেকে মাটি কেটে নিয়ে যায়। কিন্তু এ জমি খাস ছিল না। এ জমি তারা বর্গাচাষীদের মাধ্যমে চাষাবাদ করে আসছিলেন। মাটি কেটে নেওয়ার সময় চাষীরা বাধা দিলে তাদেরকে মারধরের হুমকি দেওয়া হয়।
কার্তিক চন্দ্র অধিকারী বলেন, আমাদের জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ হতো। কিন্তু মাটি কেটে নেওয়ায় ওই জমিটি এখন পুকুরে পরিণত হয়েছে। চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা এর বিচার চাই।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম শান্তুনু চৌধুরী বলেন, সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী জমিটি সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত। খাস জমি থেকে আমরা মাটি কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্প ভরাট করেছি। আমরা মালিকানাধীন কারো জমির মাটি কাটিনি। আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। ওই জমির পাশেই ৭০ টি ঘর নির্মাণ করা হয়। এখন ১৬ ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন