নিহত স্কুলছাত্রী মুক্তির বড় বোনকে চাকরি দিলেন জেলা প্রশাসক
- আপডেট সময় : ১০:১৮:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ মে ২০২৩
- / ৬১
রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা:
নেত্রকোনার বারহাট্টায় বখাটে কাওসারের দ’য়ের কোপে নিহত স্কুলছাত্রী মুক্তি রাণী বর্মনের বড় বোনকে নিজ অফিসে চাকুরী দিলেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক।
আজ (৯ মে) মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ নিহত মুক্তির বড় বোন নিপা বর্মণকে নিজ অফিসে নেজারত শাখায় আউট সোর্সিং পদে নিয়োগ প্রদান করেন। চাকুরী পাবার পর নিপা বর্মনের বাবা-মা জেলা প্রশাসকের প্রতি কৃতঞ্জতা প্রকাশ করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. মামুন খন্দকার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অনিমেষ সোম, বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম মাজহারুল ইসলাম, বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বারহাট্টা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার সাহা সেন্টু, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য, সম্পাদক লিটন পন্ডিত, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ সম্পাদক অধ্যাপক সুব্রত রায় মানিক এবং নিপার বাবা নিখিল বর্মণ।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, এই পরিবারের অসহায়ত্ব দেখে মানবিকতার দৃষ্টিতে এবং চাকুরীর সকল নিয়ম কানুন মেনেই নিহত মুক্তির বড় বোন নিপা বর্মণকে চাকুরী প্রদান করা হয়েছে। নেত্রকোনার সর্বস্তরের স্তরের মানুষেরও দাবী ছিল এই পরিবারকে সহায়তা করা।
উল্লেখ্য, নেত্রকোণার বারহাট্টার বাউসী ইউনিয়নের প্রেমনগর ছালিপুড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী মুক্তি বর্মণকে একই এলাকার কাওসার নামে এক যুবক গত ২ মে বিকালে ধারালো দা দিয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে খুন করে। এই খুনের ঘটনায় সারা দেশে নিন্দার ঝড় উঠে। পরে ডিবি পুলিশ অধিক তৎপরতা চালিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আসামী কাওসারকে পাশের একটি জঙ্গল খেকে আটক করে এবং কাওসার প্রাথমিকভাবে এই খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করে। মুক্তির পিতা বারহাট্টা থানায় কাওসারকে আসামী করে মামলা দায়েরও করেন। কাওসার বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে।
মুক্তি রানীরা ছয় বোন ও এক ভাই। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার হলেও তাঁর বাবা খুব কষ্ট করে সব ভাই-বোনদের পড়াশোনা করিয়েছেন। তার বাকি পাঁচ মেয়ে ও এক ছেলে যেন নির্ভয়ে পড়াশোনা করতে পারে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে দাবি জানিয়েছেন মুক্তি রানীর বাবা নিখিল বর্মণ।
নিহত মুক্তির বোনকে চাকুরী প্রদানের বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, মুক্তি রানীর ভাই-বোনের পড়ালেখা চালিয়ে যেতে যেন কোন বেগ পেতে না হয়, তারা যেন অসহায়ত্ববোধ না করে সেই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকেই মুক্তি রানী বর্মণের বড় বোনকে চাকুরী দেওয়া হয়েছে। এতে পরিবারটি অর্থনৈতিক ও মানসিকভাবে সাপোর্ট পাবে। প্রশাসন সবসময়ই মুক্তির পরিবারের প্রতি সুনজর রাখবে। মুক্তি রানী হত্যার ঘটনায় আমি ব্যক্তিগতভাবে খুবই মর্মাহত।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসনে চাকুরীর সঙ্গে মানবিকতার দায়িত্বও রয়েছে আমাদের। আমরা চাই নিহত মুক্তি রানী বর্মণের মতো আর যেন কাউকে এভাবে বখাটের হাতে জীবন দিতে না হয়।