০২:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫

বিভিন্ন অভিযোগে ইউএনওসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে দুদুকে অভিযোগ

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
  • / ৫৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচীর আওতায় ফ্লাড কন্ট্রোল ড্রেনেজ (এফসিডি) প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যাবহার ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএও) পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমা এবং উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং তিন সদস্যসচিবসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কার, ডুবন্ত বাঁধ ভাঙন বন্ধকরণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অন্য অভিযুক্তরা হলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জেলা শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এনায়েত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মোশারফ হোসেন ইজহারুল, পিইসির সভাপতি বিধান কৃষ্ণ সরকার, সজল দে, মন্টু চক্রবর্তী, ফকরুল আলম, সুপ্রদীপ সরকার, ফুল মিয়া, রথীন্দ্র বর্মন, মন্তোষ বিশ্বাস, অঞ্জন সরকার, ফখলুল ইসলাম, ঝুটন সরকার, তাজুল ইসলাম, আশিকুর রহমান ডেন্ডু, মোকশুদ মিয়া, আহাদনুর মিয়া, আনোয়ার হোসেন, কবিন্দ্র সরকার, সুচিত্রা তরফদার, হারুণ মিয়া, নিরঞ্জন চন্দ্র সরকার, আবুল কালাম, কামরুল ইসলাম তালুকদার, নজরুল ইসলাম জলিল, প্রাণেশ সরকার ও আবু বকর।
খালিয়াজুরী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয়, ময়মনসিংহ এবং নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের তথ্যসূত্রে জানা গেছে, অভিযোগকারী কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর বিভাগীয় কার্যালয় ময়মনসিংহ এবং ১৭ এপ্রিল নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযগে জানা গেছে, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের নাউটানা উপ-প্রকল্প, খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নে কীর্তনখোলা বেড়িবাঁধ, ছাতিয়ার হাওড়ের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ, উপজেলার মনাইজান কালিপুর থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত এবং নগর ইউনিয়নের কাওরদাইর হাওড়, মূল দাইয়ের বাঁধ, পাইতলাধোয়া হাওড়ের ফসল রক্ষা ডুবন্ত বাঁধের ভাঙন বন্ধকরণ ও মেরামত কাজসহ বিভিন্ন বাঁধের সংস্কার কাজ করা হয়।
অভিযোগকারী বলেন, ওই সব প্রকল্পের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাবিটা নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে কমিটি গঠন করে অর্থ হাতিয়ে নেন। এছাড়া, ওই সব কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে জানাযায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০২২-২৩ অর্থবছরের এসব কাজ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। খালিয়াজুরী উপজেলায় বোরো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতের জন্য ১১৫টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা জেলা শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকল্প কমিটি করার বিষয়ে আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমাদের উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে জড়ানো হয়।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমা বলেন, উপজেলার কাবিটা প্রকল্পের সব কাজ যথাযথভাবে সরকারি নিয়ম মতো করা হয়েছে। কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রকল্প কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে শুনেছি। উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এ সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, খালিয়াজুরীতে কাবিটা প্রকল্পের কাজ নিয়ে দুদকে অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। বিষয়টি দুদকই দেখবে। জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগের কপি এখনো আমি পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

বিভিন্ন অভিযোগে ইউএনওসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে দুদুকে অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৭:৩৪:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) কর্মসূচীর আওতায় ফ্লাড কন্ট্রোল ড্রেনেজ (এফসিডি) প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠনে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যাবহার ও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, খালিয়াজুরীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএও) পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমা এবং উপজেলা কমিটির সভাপতি এবং তিন সদস্যসচিবসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে ফসল রক্ষা বাঁধ সংস্কার, ডুবন্ত বাঁধ ভাঙন বন্ধকরণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অন্য অভিযুক্তরা হলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জেলা শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, এনায়েত হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের অফিস সহকারী মো. মোশারফ হোসেন ইজহারুল, পিইসির সভাপতি বিধান কৃষ্ণ সরকার, সজল দে, মন্টু চক্রবর্তী, ফকরুল আলম, সুপ্রদীপ সরকার, ফুল মিয়া, রথীন্দ্র বর্মন, মন্তোষ বিশ্বাস, অঞ্জন সরকার, ফখলুল ইসলাম, ঝুটন সরকার, তাজুল ইসলাম, আশিকুর রহমান ডেন্ডু, মোকশুদ মিয়া, আহাদনুর মিয়া, আনোয়ার হোসেন, কবিন্দ্র সরকার, সুচিত্রা তরফদার, হারুণ মিয়া, নিরঞ্জন চন্দ্র সরকার, আবুল কালাম, কামরুল ইসলাম তালুকদার, নজরুল ইসলাম জলিল, প্রাণেশ সরকার ও আবু বকর।
খালিয়াজুরী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত বিভাগীয় কার্যালয়, ময়মনসিংহ এবং নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগের তথ্যসূত্রে জানা গেছে, অভিযোগকারী কৃষক শফিকুল ইসলাম তালুকদার খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমাসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর বিভাগীয় কার্যালয় ময়মনসিংহ এবং ১৭ এপ্রিল নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযগে জানা গেছে, জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের নাউটানা উপ-প্রকল্প, খালিয়াজুরী সদর ইউনিয়নে কীর্তনখোলা বেড়িবাঁধ, ছাতিয়ার হাওড়ের ফসলরক্ষা বেড়িবাঁধ, উপজেলার মনাইজান কালিপুর থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত এবং নগর ইউনিয়নের কাওরদাইর হাওড়, মূল দাইয়ের বাঁধ, পাইতলাধোয়া হাওড়ের ফসল রক্ষা ডুবন্ত বাঁধের ভাঙন বন্ধকরণ ও মেরামত কাজসহ বিভিন্ন বাঁধের সংস্কার কাজ করা হয়।
অভিযোগকারী বলেন, ওই সব প্রকল্পের কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাবিটা নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে কমিটি গঠন করে অর্থ হাতিয়ে নেন। এছাড়া, ওই সব কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে জানাযায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২০২২-২৩ অর্থবছরের এসব কাজ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। খালিয়াজুরী উপজেলায় বোরো ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতের জন্য ১১৫টি পিআইসি গঠন করা হয়েছে। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নেত্রকোনা জেলা শাখার কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী এবং পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অহেতুক মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করা হয়েছে। প্রকল্প কমিটি করার বিষয়ে আমাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমাদের উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে জড়ানো হয়।
খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পাউবো কাবিটা স্কিম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভাপতি রুয়েল সাংমা বলেন, উপজেলার কাবিটা প্রকল্পের সব কাজ যথাযথভাবে সরকারি নিয়ম মতো করা হয়েছে। কাজও শেষ হয়ে গেছে। প্রকল্পের কাজ নিয়ে প্রকল্প কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে শুনেছি। উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে এ সমস্ত ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।

নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, খালিয়াজুরীতে কাবিটা প্রকল্পের কাজ নিয়ে দুদকে অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। বিষয়টি দুদকই দেখবে। জেলা প্রশাসকের কাছে দেওয়া অভিযোগের কপি এখনো আমি পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন