১১:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

নেত্রকোনায় ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে

রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৫:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
  • / ১৩৭

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে অতি দরিদ্র পরিবারের জন্য সরকার থেকে দেওয়া ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ডের চাল উপকারভোগীদের ভুয়া টিপসই-স্বাক্ষর দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বার মিলে মালামাল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নেত্রকোনা জেলাধীন মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (জহর) এবং তার সহযোগী একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) মেম্বার আবুল কাশেম সাইফুলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও ফাগুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরকবি মিয়া (৫ এপ্রিল) বুধবার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারী সাবেক মেম্বার নুরকবি মিয়া বলেন, গতবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার থেকে দেওয়া ভিজিএফ কার্ডের চাল উপকারভোগীদের টিপ-স্বাক্ষর না নিয়েই নিজেরাই টিপ-স্বাক্ষর জাল করে মালামাল তুলে নিয়ে দুইজন মিলে আত্মসাত করেছেন। চাল বিতরণের মাষ্টাররোলে দুর্নীতিবাজরা অনেক একই উপকারভোগীর নাম দুইবার করে লেখা, কারও নাম থাকলেও বাবার নাম-ঠিকানা কিছুই নেই। ভিজিডি কার্ডের ক্ষেত্রেও তারা একইভাবে কয়েকজন উপকারভোগীকে চাল দিয়ে বাকিদের টিপ-স্বাক্ষর জাল করে চাল তুলে আত্মসাত করেছেন। গত বন্যার সময়ও তারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দেওয়া শুকনো খাবার ও নগদ টাকাসহ সরকারি সহায়তা আত্মসাৎ করেছেন।

সাবেক মেম্বার নুরকবি মিয়া আরও বলেন, অভিযোগে সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দিয়েছি। আমি চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এসব অনিয়মের বিচার হোক।
সরেজমিন ফাগুয়া গ্রামে গেলে গ্রামের শাকিল আলম বলেন, আমার নামে ভিজিএফ কার্ড আছে সেটা সম্প্রতি জানতে পারলাম। কিন্তু কোনদিন চাল পাইনি। আমার নামে টিসিবি কার্ডও আছে কিন্তু পণ্য পাই না। চেয়াম্যানকে এসব বিষয় জানালে তিনি বলেন, এসব মেম্বার জানে। আর মেম্বার বলেন, এসব চেয়ারম্যান সাহেবের বিষয় তিনিই সব জানেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা ভুমিহীন সুফিয়া বেগম, সজীব রহমান, মোজাম্মেল, মোজাহিদসহ এলাকার অনেকেই বলেন, তাদের নামে ভিজিএফ কার্ড আছে। কিন্তু এতদিন তারা বিষয়টি জানতেন না। তাদের টিপ-স্বাক্ষর জাল করে নিয়মিত চাল তোলা হচ্ছে, তারা নিজেরাও জানেনা। তাদের অভিযোগ চেয়ারম্যান ও মেম্বার দুইজন মিলেই এমন কাজ করছে। তাই, তারা এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত মেম্বার আবুল কাশেম সাইফুল বলেন, অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা বানোয়াট। কোনো উপকারভোগীর চাল আত্মসাত করা হয়নি। সমাজে আমাদের সম্মানহানি করার উদ্যেশ্যই এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে তেতুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (জহর) বলেন, সরকারিভাবে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতেই সবসময় চাল বিতরণ করা হয়। তাই সেখানে অনিয়মের সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা ও সাজানো। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

সাবধান
এই পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু কপি করতে পারবেন না

নেত্রকোনায় ভিজিএফের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় : ০৫:১৩:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ এপ্রিল ২০২৩
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা:

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে অতি দরিদ্র পরিবারের জন্য সরকার থেকে দেওয়া ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ডের চাল উপকারভোগীদের ভুয়া টিপসই-স্বাক্ষর দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ(ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বার মিলে মালামাল আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
নেত্রকোনা জেলাধীন মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (জহর) এবং তার সহযোগী একই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের (ইউপি সদস্য) মেম্বার আবুল কাশেম সাইফুলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে।
তেতুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার ও ফাগুয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরকবি মিয়া (৫ এপ্রিল) বুধবার নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগকারী সাবেক মেম্বার নুরকবি মিয়া বলেন, গতবছর ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার থেকে দেওয়া ভিজিএফ কার্ডের চাল উপকারভোগীদের টিপ-স্বাক্ষর না নিয়েই নিজেরাই টিপ-স্বাক্ষর জাল করে মালামাল তুলে নিয়ে দুইজন মিলে আত্মসাত করেছেন। চাল বিতরণের মাষ্টাররোলে দুর্নীতিবাজরা অনেক একই উপকারভোগীর নাম দুইবার করে লেখা, কারও নাম থাকলেও বাবার নাম-ঠিকানা কিছুই নেই। ভিজিডি কার্ডের ক্ষেত্রেও তারা একইভাবে কয়েকজন উপকারভোগীকে চাল দিয়ে বাকিদের টিপ-স্বাক্ষর জাল করে চাল তুলে আত্মসাত করেছেন। গত বন্যার সময়ও তারা ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য দেওয়া শুকনো খাবার ও নগদ টাকাসহ সরকারি সহায়তা আত্মসাৎ করেছেন।

সাবেক মেম্বার নুরকবি মিয়া আরও বলেন, অভিযোগে সবকিছু সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করে দিয়েছি। আমি চাই সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এসব অনিয়মের বিচার হোক।
সরেজমিন ফাগুয়া গ্রামে গেলে গ্রামের শাকিল আলম বলেন, আমার নামে ভিজিএফ কার্ড আছে সেটা সম্প্রতি জানতে পারলাম। কিন্তু কোনদিন চাল পাইনি। আমার নামে টিসিবি কার্ডও আছে কিন্তু পণ্য পাই না। চেয়াম্যানকে এসব বিষয় জানালে তিনি বলেন, এসব মেম্বার জানে। আর মেম্বার বলেন, এসব চেয়ারম্যান সাহেবের বিষয় তিনিই সব জানেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা ভুমিহীন সুফিয়া বেগম, সজীব রহমান, মোজাম্মেল, মোজাহিদসহ এলাকার অনেকেই বলেন, তাদের নামে ভিজিএফ কার্ড আছে। কিন্তু এতদিন তারা বিষয়টি জানতেন না। তাদের টিপ-স্বাক্ষর জাল করে নিয়মিত চাল তোলা হচ্ছে, তারা নিজেরাও জানেনা। তাদের অভিযোগ চেয়ারম্যান ও মেম্বার দুইজন মিলেই এমন কাজ করছে। তাই, তারা এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত মেম্বার আবুল কাশেম সাইফুল বলেন, অভিযোগ পুরোটাই মিথ্যা বানোয়াট। কোনো উপকারভোগীর চাল আত্মসাত করা হয়নি। সমাজে আমাদের সম্মানহানি করার উদ্যেশ্যই এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে তেতুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম চৌধুরী (জহর) বলেন, সরকারিভাবে নিয়োজিত ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতেই সবসময় চাল বিতরণ করা হয়। তাই সেখানে অনিয়মের সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা ও সাজানো। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অভিযোগটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন