বাগমারায় এমপি এনামুল হকের প্রচেষ্টায় বদলে গেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্র
- আপডেট সময় : ০৮:২৪:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
- / ৫৬
বাগমারা প্রতিনিধি:
ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী জেলার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত বাগমারা উপজেলা। ১৬টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত বিশাল উপজেলায় প্রায় চার লক্ষাধিক লোকের বাস ১৯৮৩ সালে বৃহত্তর এই জনপদটি উপজেলার মর্যাদা পেলেও দীর্ঘদিন উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত রয়ে যায়। বিএনপি ও জামায়াত জোট সরকারের দুঃশাসনে বাগমারায় উত্থান ঘটে কথিত মধ্যযুগীয় ‘বাংলা’ ভাইয়ের যা বাগমারাকে একটি রক্তাক্ত ও সন্ত্রাসীর জনপদ হিসাবে পরিচিতি দান করে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পর বাগমারার মানুয়ের আশা-আকাংখার লালিত স্বপ্ন-একটি সমৃদ্ধ ও বাসযোগ্য ‘বাগমারা বিনির্মাণে’ সার্বিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায়, এমপি এনামুল হক নিরলস প্রচেষ্টা ও বাগমারাবাসীর সহযোগিতায় বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কর্মসূচী যেমন রাস্তাঘাট নির্মাণ, বিদ্যুতায়ণ, শিক্ষা, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন এবং জনগণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাকরণ সহ সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধিত হয়েছে। সম্মিলিত ও সার্বিক প্রচেষ্টায় বাগমারা জাতীয় পর্যায়ে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ স্বীকৃতি পেয়েছে।বর্তমান সরকারের আমলে বাগমারায় শিক্ষার মান উন্নয়ন ও বিস্তারে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। শিক্ষার প্রসারে নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং বিদ্যমান প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হয়েছে। ভবানীগঞ্জ কলেজকে সরকারীকরণ ও তাহেরপুর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এবং সালেহা ইমারত কলেজ, বাগমারা কলেজ ও নাসিরগঞ্জ কলেজ ডিগ্রি পর্যায়ে উন্নীতকরণ, বালানগর ফাজিল মাদ্রাসাকে কামিল পর্যায়ে উন্নীতকরণ সহ তিন ধাপে ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। উপজেলায় ১১টি কলেজ, ৫৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৯টি মাদ্রাসার নতুন একাডেমীক ভবন এবং ১০৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।এছাড়াও অনেক বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া, ১০৮টি রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করা হয়েছে।বাগমারায় মূলত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ২২০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ১০১ টি, কলেজ রয়েছে ২৪ টি, মাদ্রাসা রয়েছে ৪৫ টি এবং কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৩৩টি এবং উপজেলার ২২ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। যার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে ছেলে-মেয়েরা।তৃণমূল পর্যায়ে তথ্য ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারে মাধ্যমিক শিক্ষাস্তরে ‘ডিজিটালাইজেশন’ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় উপজেলায় একটি দ্বিতল বিশিষ্ট আইসিটি ভবন (ডিজিটাল ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার) নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া, শিক্ষা প্রণোদনা কর্মসূচী যেমন বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে দরিদ্র ও অবহেলিত শিশুদের বিদ্যালয়মূখী করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়িত হচ্ছে। বাগমারার সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উপজেলায় বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ে ১০০ ভাগ এবং মাধ্যমিক পর্যায়ে ৯৫% ছাত্র/ছাত্রী বিদ্যালয়গামী হয়েছে এবং উপজেলার শিক্ষার হার জেলার সর্বোচ্চ ৮০ ভাগ এ দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকমন্ডলী ও অভিভাবকদের যৌথ প্রচেষ্টায় শিক্ষা খাতে এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। বাগমারায় শিক্ষার সম্প্রসারণ ও জনকল্যাণে ২০০৬ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি তাঁর বাবা-মা’র নামে “সালেহা ইমারত ফাউন্ডেশন ” স্থাপন করেন। দৃষ্টিহীনদের চিকিৎসা ছাড়াও মেধাবীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান এবং সার্বিক পৃষ্ঠ পোষকতার মাধ্যমে এ ফাউন্ডেশনটি মানব সেবামূলক কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। ‘সালেহা ইমারত ফাউন্ডেশনের’ মাধ্যমে প্রতিবছর এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলের ভিত্তিতে সংবর্ধনা আয়োজনের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা, শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করে পুরস্কৃত করার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি ও গুণগত মান বৃদ্ধিতে এক অনন্য ভূমিকা পালন করছে। বাগমারায় শিক্ষা ও সামাজিক সচেতনা বৃদ্ধিকল্পে দেশ বরেণ্য জ্ঞানীদের অংশ গ্রহণে বছর ব্যাপি নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিটি কার্যক্রমে এলাকার যুবক ছাত্র, শিক্ষক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনীতিক ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণীর জনসাধারণ অংশ গ্রহণ করে থাকে।স্থানীয় নানা উন্নয়নের পাশাপাশি দেশের মুক্তিযুদ্ধে ও স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা প্রতিফলিত করার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান এঁর স্মৃতি, আদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শন সহ স্বাধীনতার ইতিহাসকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিকট সঠিক ভাবে তুলে ধরাসহ জাতির জনকের অবদানকে স্মৃতিতে অম্লান করে ধরে রাখতে ৬ তলা বিশিষ্ট বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছেন। এখানে রয়েছে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনের অফিস। পার্শ্ববর্তী উপজেলা সহ জেলা শহরের অনেক নামি দামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ প্রতিদিন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতা সম্পর্কে সম্যক ধারণা এবং জ্ঞান অর্জন করছে। ইতোমধ্যে বুদ্ধিজীবী মহল সহ সর্বস্তরের জনগণ কর্তৃক ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে এই জাদুঘর।মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করে ব্যাপক প্রশাংসা করেছেন। ইঞ্জিঃ এনামুল হকের বড় অর্জন পিছিয়ে পড়া জনগণকে উন্নয়নের নতুন আলোয় নিয়ে এসেছেন। সেই সন্ত্রাস কবলিত বাগমারা এখন জাতীয় উন্নয়নের রোল মডেল।